কাঁসাই নদীতে চিংড়ির উৎসব! বেলা বাড়তেই দাসপুরের সামাট ও জনার্দনপুরের মানুষ নদীতে নেমে পড়লেন মাছ ধরতে, দাসপুরের সামাট এলাকা। বেলা একটু বাড়তেই যেন মেলার চেহারা নিল কাঁসাই নদীর ধারে। কেউ হাতে ছোট জাল, কেউ আবার পিঠে ব্যাগ। নদীর জলে একে একে নেমে পড়ছেন গ্রামবাসীরা। নদীর ওপার জনার্দনপুর থেকেও মানুষ ছুটে আসছেন। শতাধিক মানুষকে দেখা গেল জলে দাঁড়িয়ে জাল ফেলতে। চোখে-মুখে প্রত্যাশার ঝিলিক— “আজ চিংড়ি উঠছে!”
advertisement
আরও পড়ুনঃ ভেঙে চুরমার ২০ বছরের সংসার, এয়ার হোস্টেসের প্রেমে পাগল ‘হিট’ অভিনেতা ছেড়ে যান সন্তানকেও
ঘণ্টা খানেক কাটতে না কাটতেই দেখা গেল অনেকের ব্যাগভর্তি চিংড়ি মাছ। ছোট, মাঝারি, বড়— সব রকম সাইজের চিংড়িই ধরা পড়ছে। কেউ হাসছেন, কেউ চুপচাপ জাল গুটিয়ে নতুন জায়গায় চেষ্টা করছেন। এক প্রবীণ মাছধরিয়া বললেন, “এমন ভাবে চিংড়ি ভেসে ওঠে মাঝে মাঝে। আজ ভাগ্য খুলে গেছে।”
দাসপুরের কাঁসাই নদীর আশপাশের গ্রামগুলিতে বহু পরিবারই বছরের পর বছর ধরে নদীর জলের উপরই নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। খরার সময় বা জল কমে গেলে তাঁদের অসুবিধা হয়, কিন্তু এমন দিনে নদীর জলে যেন উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
তবে প্রশ্ন একটাই— হঠাৎ এই চিংড়ি এত ভেসে উঠছে কেন?
স্থানীয়দের মতে, বর্ষার পর নদীর তলায় পলি জমে জলস্তরের পরিবর্তন হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীর জলের অক্সিজেনের মাত্রা হঠাৎ কমে গেলেও এমনটা ঘটে। দাসপুর ব্লকের এই কাঁসাই নদী দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। নদী যখন খরস্রোতা, তখন ভয়; আবার যখন চিংড়িতে ভরে ওঠে, তখন আশীর্বাদ। আজ সেই আশীর্বাদের দিন।
নদী কখনো খরস্রোতা কখনো শান্ত।এমনিতেই নদীর ধারে বসবাসকারী মানুষজনদের চিন্তায় থাকতে হয়।তবে মৎস্যজীবীদের জন্য এই নদীই আবার রুজি রুটির জায়গা।নদীর দুই তীরে চলছে চিংড়ি ধরার উৎসব, আর তার মাঝেই ভেসে উঠছে গ্রামীণ জীবনের এক জীবন্ত দৃশ্য— নদীই জীবন, নদীই রোজগার।





