আরও পড়ুনঃ খুঁজে দেখুন বাড়িতে কি এই প্লাস্টিক আছে? জমা দিতে পারলেই মিলবে পুরষ্কার! দেরি করলে বড় মিস
এই ব্যবসা শুধুমাত্র হিমাংশুবাবুর একার নয়, বরং স্ত্রী বন্দনা দেবী, ছেলে কাশীনাথ ও পুত্রবধূ শম্পা সবাই মিলেই দোকানের কাজ সামলান। হিমাংশু বাবু বলেন, “৩২ বছর ধরে আজও দাম বাড়েনি। এক টাকাতেই সব বিক্রি করি।” তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এক টাকাতেই চপ বিক্রি করছেন হিমাংশুবাবু। বর্তমান বাজারে যেখানে দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে, সেখানে তিনি কীভাবে এত কম দামে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন? হিমাংশু বাবু জানিয়েছেন, একসময় তাঁদের পরিবার খুবই আর্থিক সংকটে ছিল। তখন তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সেন বিকল্প রোজগারের পথ খুঁজতে চপের দোকান খোলেন। সেইসময় তিনি স্থানীয় মানুষের আর্থিক অবস্থা বুঝেই ৫০ পয়সা দরে চপ বিক্রি শুরু করেন। তারপর থেকে হিমাংশু বাবুর আমলে গত ৩২ বছরে দাম বেড়েছে মাত্র ৫০ পয়সা। সবমিলিয়ে এখন এক টাকাতেই পাওয়া যায় তেলেভাজা।
advertisement
এলাকার গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরাই তাঁর দোকানের প্রধান ক্রেতা। স্বল্প মুনাফায় অধিক বিক্রিই তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। হিমাংশু বাবু আরও বলেন, “সকলের কথা ভেবে দাম বাড়ায়নি। বিক্রি বেশি হলে তাঁরই মধ্যে আমারও কিছু লাভ হয়। আমার কাছে দূর দূর থেকে অনেক মানুষ আসেন। আমি যতদিন থাকব চেষ্টা করব এক টাকাতেই বিক্রি করার।” দূর দূরান্ত থেকে প্রতিদিন বহু মানুষ এসে ভিড় জমান এই দোকানে। সেরকমই আব্দুল হাকিম নামের এক ক্রেতা বলেন, “ছোট থেকে এক টাকাতেই খেয়ে যাচ্ছি। এখনও স্বাদ ভুলতে পারিনি , তাই যখনই মন হয় চলে আসি।”
হিমাংশু বাবু এক টাকার চপ বেঁচে সংসার চালানোর পাশাপাশি মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করেছেন। ধুমধাম করে বিয়েও দিয়েছেন মেয়ের। বাড়িঘর সংস্কার করেছেন, এমনকি পুরানো দোকানের পাশেই নতুন দোতলা বাড়িও তৈরি করেছেন। হিমাংশু সেন শুধু ব্যবসায়ী নন, তিনি মানুষের কথা ভাবেন। তাঁর সততা, পরিশ্রম ও ব্যবসায়িক বুদ্ধি সত্যিই প্রশংসনীয়। বাজার যতই উঠুক, তাঁর দোকানে এক টাকার চপ পাওয়া যাবে, এটাই যেন আজ জামালপুরের অলিখিত নিয়ম!
বনোয়ারীলাল চৌধুরী