দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি আবার দেখা মিলেছে এই অপূর্ব প্রাণীর। চন্দ্রকোনা থানার ঝাঁকরা এলাকায় এক বাসিন্দা প্রথম দেখতে পান একটি ক্যামেলিয়নটি। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ কৌতূহলবশত প্রাণীটির ছবি তুলতে শুরু করেন। আবার অনেকে ভয় পেয়ে দূরে সরে যান। পরে বিষয়টি জানানো হয় বন দফতর ও ওয়াইল্ড লাইফ রিকভারি টিমকে। ওই টিমের সদস্য মলয় ঘোষ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাণীটিকে নিরাপদে উদ্ধার করেন। তিনি জানান, স্থানীয়রা আমাদের খবর দেওয়ার পর আমরা দ্রুত সেখানে পৌঁছে উদ্ধার করেছি। প্রাণীটি গাছের ডালে লুকিয়ে ছিল। খুব সাবধানে সেটিকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং বর্তমানে বন দফতরের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন : পুরনোর মায়া ত্যাগ করে নিতে হবে নতুন পদ্ধতি, পান চাষে ঘরে আসবে ডবল লাভ! উপায় বললেন বিশেষজ্ঞ
মলয় ঘোষ আরও জানান, এই ধরনের প্রাণী প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং বনে প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র বজায় রাখতে এদের অবদান অমূল্য। কিন্তু মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কার্যকলাপের জন্য এখন এদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যামেলিয়ন প্রজাতির প্রাণীগুলি সাধারণত শান্ত প্রকৃতির হয় এবং মানুষের সংস্পর্শ পছন্দ করে না। এদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল রঙ পরিবর্তনের ক্ষমতা। যা মূলত পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ও আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অনেকেই ভুলভাবে মনে করেন যে এটি কেবলমাত্র সৌন্দর্যের জন্য রঙ বদলায়।
আরও পড়ুন : বর্ধমানে রয়েছে গাছপ্রেমীদের ‘স্বর্গ’, মাত্র ৬ টাকা থেকে শুরু দাম! কিনলে ফ্রিতে পাবেন পরিচর্চার টিপস
স্থানীয় বন দফতর জানিয়েছে, যারা এই ধরনের বন্যপ্রাণী অবৈধভাবে ধরে রাখেন বা বিক্রি করেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কোনও ধরনের বন্যপ্রাণী ঘরে রাখা বা বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। যার শাস্তি হিসেবে জেল ও জরিমানা, উভয়ই হতে পারে। চন্দ্রকোনায় বহু বছর পর ক্যামেলিয়নের দেখা মেলায় একদিকে যেমন পরিবেশপ্রেমীদের মধ্যে আশার আলো জেগেছে, তেমনই সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও সামনে এসেছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবেশ রক্ষা এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে হলে বনাঞ্চল সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ এবং বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় সাধারণ মানুষের সহযোগিতা অপরিহার্য। স্থানীয় প্রশাসন ও বন দফতরের পক্ষ থেকে সকলের উদ্দেশে আহ্বান জানানো হয়েছে, যদি কোথাও কোনও বিরল বা বন্যপ্রাণী দেখা যায়, তাহলে যেন কেউ তা ধরতে বা ক্ষতি করতে না যান। বরং অবিলম্বে স্থানীয় বন দফতর বা ওয়াইল্ড লাইফ রিকভারি টিমকে খবর দেওয়া হয়। এই ছোট্ট অথচ আশ্চর্য প্রাণীর উপস্থিতি যেন আবার মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতি ও তার বাসিন্দাদের সুরক্ষা মানেই আমাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা।





