মানুষের চোখে এটি একটি টিলা হলেও, আসলে এটি উইপোকাদের সুপরিকল্পিত রাজপ্রাসাদ। যেখানে হাজারও উইপোকা নিজেদের জীবনচক্র চালিয়ে যাচ্ছে নিঃশব্দে। মূলত জঙ্গল এলাকা জুড়ে চোখে পড়ে এই ঢিপি। চন্দ্রকোনা, শালবনী গড়বেতা সহ বেশ কিছু জায়গাই এই ঢিবি দেখা যায়। উইপোকারা বছরের পর বছর ধরে মাটির কণা, নিজেদের লালা ও নানা প্রাকৃতিক উপাদানের মিশ্রণে তৈরি করে এই স্থায়ী আবাস। বাইরে থেকে যতই দৃঢ় মনে হোক, ভিতরে রয়েছে অসংখ্য টানেল, চলার পথ, ছোট বড় কক্ষ, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, এমনকি খাদ্য সংরক্ষণের আলাদা জায়গাও।
advertisement
আরও পড়ুন : ছোটখাটো কারণে ছুটতে হবে না হাসপাতাল, শালবনিতে এবার দুয়ারেই স্বাস্থ্য পরিষেবা! পাওয়া যাবে ওষুধও
মাঝখানে নিরাপদ স্থানে থাকে রাণী উইপোকা, যার চারপাশে তৈরি থাকে বিশেষ সুরক্ষা বলয়। এই ঢিবির ভেতরের গঠন এতটাই পরিকল্পিত যে বিজ্ঞানীরাও বিস্মিত। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, আর্দ্রতা ধরে রাখা, শিকারিদের থেকে সুরক্ষা, প্রতিটি বিষয়ই সূক্ষ্মভাবে তৈরি। এত ছোট প্রাণীরা কীভাবে এত বড় এবং বৈজ্ঞানিক কাঠামো গড়ে তুলতে পারে, তা মানুষের কাছে বিস্ময়েরই বিষয়। উইপোকার এই ঢিবি শুধু তাঁদের আবাসস্থান নয়, গোটা জঙ্গলের পরিবেশব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বনের মৃত গাছ, শুকনো পাতা ও বিভিন্ন জৈব বর্জ্য পচিয়ে মাটিকে উর্বর করে তোলে উইপোকারা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ফলে নতুন গাছ জন্মাতে সুবিধা হয়। ঢিবির চারপাশে অনেক ছোট প্রাণীরও আশ্রয় তৈরি হয়, যা জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জঙ্গলে হাঁটতে হাঁটতে দূর থেকে দেখলে এই ঢিবি হয়ত তুচ্ছ মনে হতে পারে। কিন্তু কাছে গেলে বোঝা যায় প্রকৃতি কীভাবে ক্ষুদ্র প্রাণীর হাত ধরে সৃষ্টি করে বিশাল বিস্ময়। উইপোকাদের এই নির্মাণ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানই গুরুত্বপূর্ণ, আর ক্ষুদ্র প্রাণীরাও বড় ভূমিকা রাখতে পারে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়।





