হাতের নাগালে মাছ রয়েছে আর বিড়াল তা না খেয়ে চুপ করে বসে থাকবে এমন তো ভাবাই ভুল। কিন্তু বেড়ালদের ‘দৈত্যকুলের প্রহ্লাদ’ হয়ে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের ‘মিনি’। সে জাতে বেড়াল হয়েও, বাজারের এক মাছ ব্যবসায়ীর থরে থরে সাজানো লোভনীয় মাছের পসরা সে কিনা পাহারা দেয়! মাছ বিক্রেতা সন্টু ধীবর দোকান ছেড়ে কোথাও গেলে তাঁর একমাত্র ভরসা মিনি।
advertisement
দোকানের সাজিয়ে রাখা মাছের আকর্ষণে তপস্বী মিনির ধ্যান ভঙ্গ হয় না। নিজের সংকল্পে অটুট থাকে সে।পাশাপাশি মিনির দাপটে অন্য বিড়াল, কুকুররা ওই মাছের দোকানের দিকে ফিরে তাকাতেও সাহস পায় না। মিনির কাণ্ড দেখে বিস্মিত ক্রেতা থেকে পথচারী। মাছের দোকানে মিনির ভাবভঙ্গিমা দেখে আবার পথ চলতি মানুষ ব্যাঙ্গ করে বলে ওঠেন, বিড়ালটার এমন হাবভাব যেন ‘ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না’। ব্যাতিক্রমী মিনি তার সততায় নজির গড়ে মালিক-সহ বাজারের প্রতিটি মাছ ব্যবসায়ীর অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেছে।
মাছ বিক্রেতা সন্টুবাবু জানান, ওই বিড়ালটি প্রায় ছ’বছর আগে বাজারে ঘোরাফেরা করত। তিনি আদর করে মিনি বলে ডাকতেন। দোকান খোলার আগেই ভোরবেলায় মিনি দোকানে হাজির হয়ে যায়।দোকানে মাছ সাজানো থাকলে তার পাশে বসে থাকত চুপটি করে। প্রথম প্রথম সন্টুবাবু ভয় পেতেন, কোনও মাছ খেয়ে নেবে না তো। একদিন মিনির পরীক্ষা নেন তিনি। মিনিকে দোকানে মাছের সামনে বসিয়ে সন্টুবাবু দোকান ছেড়ে চলে যান। দূর থেকে মিনির ওপর নজর রাখেন দীর্ঘক্ষণ। কিন্তু মিনি কোনও মাছে মুখ দেয়নি আবার মাছ নিয়ে পালিয়েও যায়নি।
তিনি ফিরে এসে মিনিকে আদর করে একটুকরো মাছ খেতে দিলে মিনি মহানন্দে তৃপ্তি করে খেয়ে নেয়। তিনি দোকান ছেড়ে কোথাও গেলে মিনি দোকানের ক্যাসবাক্সে বসে মাছগুলি পাহারা দেয়। দোকানে আসা ক্রেতারা সকলেই মিনিকে খুব ভালবাসে। বাজারের আশপাশেই কোথাও মিনির আস্তানা রয়েছে। বাজারে বিড়াল ও কুকুরের উৎপাত লেগেই থাকে। কিন্তু মিনি হল ব্যতিক্রমী চরিত্রের একটি বিড়াল।





