পঙ্কজ দাশ রথী, এগরা: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পুরনো স্কুলে কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তিন ঘন্টা স্কুলে বসে থাকার পরেও স্কুলে যোগদান করানো হল না শিক্ষিকাকে। শিক্ষা সংসদের কোনও নির্দেশ না আসায় শিক্ষিকাকে কাজে যোগদানে করানো যায়নি বলে দাবি স্কুলের।
advertisement
এগরা পুরসভা এলাকায় বাসিন্দা নীলাঞ্জনা মাইতি ২০১৪ সালে শিক্ষিকা হিসেবে প্রথম চাটলা প্রাথমিক স্কুলে যোগদান করেন। সেই স্কুলটি বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে থাকায় যাতায়াতের অসুবিধার কারণে তিন বছর পরে ২০১৭ সালে বাড়ির কাছে এগরা কসবা শীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। সেই থেকে তিনি কসবা শীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।
এই সময়ের মধ্যে দু’বার স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় ওই শিক্ষিকাকে স্বর্ণময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। যদিও এই দুটি স্কুলে তিনি কাজে যোগদান করেননি। এই অস্থায়ী বদলি নিয়ে আদালতে মামলা করেন ওই শিক্ষিকা। পরবর্তীতে শিক্ষিকার এই আদালতে যাওয়ার প্রেক্ষিতে স্থানীয় ব্যবস্থায় বদলির নির্দেশ তুলে নিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
এই বদলি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন শিক্ষিকা। সেই মামলায় হাইকোর্ট পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ বোর্ডে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সভাপতি হয়েছেন তৃণমূলের নেতা। হাইকোর্ট শিক্ষিকা নীলাঞ্জনা মাইতিকে পুরনো স্কুলে কাজে ফিরতে নির্দেশ দেয়। আদালতে সেই নির্দেশিকা নিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় কসবা শীতলা স্কুলে কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
যদিও প্রধান শিক্ষক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় শিক্ষিকাকে কাজে যোগ দান করাননি। টানা স্কুলে চার ঘন্টা বসে বাড়ি ফিরে আসেন শিক্ষিকা। শুধুমাত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকার আবেদনপত্র সিল করে রিসিভ করে নিয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও নিজের পুরনো স্কুলে কাজে যোগদান না করানোয় আদালতে নির্দেশ অবমাননা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই শিক্ষিকা।
শিক্ষিকা নীলাঞ্জনা মাইতি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে মেনে সোমবার কসবা শীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। স্কুলে তিন ঘন্টা বসে থাকার পরেও কাজে যোগদান না করতে পেরে বাড়ি চলে আসতে হয়েছে। শুধুমাত্র কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক রিসিভ করেছেন। বলছেন, পনেরো দিন সময় লাগবে’। এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আগামী সাত দিন পরে অবসর গ্রহণ করবেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাধব পড়িয়া বলেন, ‘উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশ মতো শিক্ষিকার কাগজপত্র রিসিভ করে দেওয়া হয়েছে। সংসদের নির্দেশ সংক্রান্ত কাগজ না থাকায় আমি কাজে যোগদান করাতে পারিনি’।
