বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেট চত্বরের অদূরে রয়েছে বিদ্যুৎ দফতরের অফিস। বর্ধমানের বিদ্যুৎ দফতরে সেকশন ১-এ র অফিস ব্রিটিশ ভবনেই চলছে। ওই ভবনটিতেই ছিল ব্রিটিশ আমলের ফাঁসি ঘর। তবে ভবনটিতে সরকারি দফতর চললেও যে ঘরে মঞ্চ বেঁধে ফাঁসি হত সেটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে ঠিকঠাকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করা এই ভবনটির অবস্থা ভগ্নপ্রায়।
advertisement
আরও পড়ুন: জাল টানতেই ১০ ফুটের বিশাল সাপ বেরিয়ে এল!
জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (বিদ্যুৎ) ধূর্জটিপ্রসাদ মিত্র বলেন, এই অফিসের কর্মীদের কাছ থেকে শুনেছি ব্রিটিশ আমলে এখানেই ছিল ফাঁসি ঘর। এখন সেই ঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের এখানেই ফাঁসি দেওয়া হত। তবে ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জেলাশাসকের দফতর, জেলা দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সহ নানান সরকারি দফতর রয়েছে এই কাছারি রোডে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত এই রাস্তায়। কিন্তু ৯০ শতাংশই জানেনই না এই ভবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাসের কথা। এদিকে এই ভবনের ইতিহাস সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা চাইছেন, এই ভবন সহ ফাঁসির মঞ্চের সংরক্ষণ হোক। যাতে ইতিহাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হারিয়ে না যায়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ জানান, বর্ধমান জেলা একটা সময় অনেকটা বড় ছিল। বর্তমানের হাওড়া ও হুগলি জেলা ব্রিটিশ আমলে বর্ধমান জেলার অংশ ছিল। বর্ধমান জেলাকে ১৭৯৫ সালে ভাগ করে প্রথম হুগলি জেলা হয়। তার পরে হুগলী জেলাকে ভাগ করে হাওড়া জেলা হয়। আগে বর্ধমানে আদালত ছিল না। হুগলিতে আদালত ছিল। ১৯২০ সালে বর্ধমানে বর্তমান আদালতটি তৈরি হয়। কিন্তু তার আগে ১৮৮০-এর দশকে বর্ধমান পুরনো কোর্ট এলাকা তথা এই ১নং সেকশন বিদ্যুৎ দফতরের এলাকায় কোর্ট চলেছে প্রায় ৪০ বছর ধরে। সেইসময় অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করা এই ভবনটি যথাযথভাবে সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ করা জরুরি বলেও তিনি জানান।