জানা যায়, বল্লভপুর গ্রামে কোপাই নদীর ধারে জঙ্গলাকীর্ণ এবং পরিত্যক্ত অনুর্বর বিঘা পঁচিশেক জমির বন্দোবস্ত পেলেন সুষেণবাবু তাঁর পল্লি উন্নয়ন কাজের জন্য। আর ঠিক সেই জমিতেই ১৯২৩ সালে গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে কাপড় ছাপার ছোট একটি কারখানা স্থাপন করলেন তিনি, যার নাম দিলেন ‘আমার কুটির’। পরে এক এক করে বাটিক ও চামড়ার ব্যাগ তৈরির কাজ শুরু হয় এখানে। আজ থেকে কয়েক বছর পিছিয়ে গেলে ঠিক সেই সময় দেশপ্রেমিকদের জন্য অবারিত দ্বার ছিল এই ‘আমার কুটির’। এ ভবনের নামকরণ সম্পর্কে বোলপুর শান্তিনিকেতনের একজন পথপ্রদর্শক বলেন ‘যিনিই এখানে বাস করেছেন, তিনিই যেন এটিকে তাঁর নিজের কুটির বলে ভাবেন।’ তাই এই জায়গার নাম দেওয়া হয় আমার কুটির।
advertisement
তবে এবার প্রশ্ন আপনি এখানে পৌঁছবেন কীভাবে! আপনি যদি কলকাতা হাওড়া অথবা শিয়ালদা স্টেশন থেকে যে কোনও লোকাল অথবা এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে বীরভূমের বোলপুর স্টেশন পৌঁছে যান তাহলে সেই বোলপুর স্টেশন থেকে আপনি টোটো করে নিতে পারেন। আপনি চাইলে অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে টোটো বুকিং করে নিতে পারবেন। সেখান থেকে টোটো ভাড়া করে আপনি বোলপুর শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে নিন। তাছাড়াও আপনি যদি নিজের ইচ্ছামতো যেতে চান তাহলে আপনি বোলপুর শান্তিনিকেতনে গিয়ে নিজস্ব বাইক অথবা স্কুটি ভাড়া করে অনায়াসে ঘুরে নিতে পারেন বোলপুর শান্তিনিকেতনের একাধিক জায়গা। তারপরে আপনি সেখান থেকে পৌঁছে যান সোনাঝুরির খোয়াই হাট। সেখান থেকে আপনি পৌঁছে যাবেন বল্লভপুর গ্রাম যেখানে অবস্থিত এই আমার কুটির।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
‘আমার কুটির’-এ উৎপাদিত নানা হস্তশিল্প-সামগ্রী নিয়ে বছরের বিভিন্ন সময়ে বেঙ্গালুরু, পুণে, গোয়া, মুম্বই, বিহার ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত নানা প্রদর্শনীতে নিয়মিত যোগ দেয় এই প্রতিষ্ঠান। সারা দেশের মধ্যে পুণের বাজারই সবচেয়ে ভাল বলে জানা যায়। স্বাধীনতা পূর্ব ভারতবর্ষে গড়ে ওঠা ‘আমার কুটির’-এর অনেক পরিবর্তন ঘটেছে স্বাধীন ভারতে। তবু পল্লি উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল গ্রামীণ মানুষদের হস্তশিল্প অনুশীলনের মধ্য দিয়ে কর্মমুখী এবং স্বাবলম্বী করে তোলার ধারাটিকে সে বজায় রেখেছে আজও। তাই আপনি এবার বোলপুর শান্তিনিকেতন গেলে অবশ্যই ঘুরে আসুন এই জায়গা থেকে, না হলে আপনার পুরো বোলপুর শান্তিনিকেতন ভ্রমণ বৃথা হয়ে যাবে।