আরও পড়ুন: রাস্তা তৈরি দেখতে গিয়ে মাথায় হাত গ্রামবাসীদের, হাতেনাতে ধরল ঠিকাদারকে! তারপর…
এই কোলাহল অন্য কিছু নয়, প্রতি শনিবার শহরের এই জায়গাতেই বসে হাট। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনা হল গত ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শনিবার ভোর রাতে এই এলাকাতেই বসে শঙ্খ হাট। এমনকি পৌষ-মাঘের ভরা শীতেও হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে চলে এই হাট। ঘোর বর্ষাতেও এর কোনও ব্যতিক্রম হয় না। এখানে ভোর ছ’টা থেকেই ভিড় করতে শুরু করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কয়েক ঘণ্টার এই হাটে লাখ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। আর সেই বেচাকেনা’কে ঘিরেই আজও গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বাঁকুড়ার হাটগ্রামে।
advertisement
হাটগ্রাম শঙ্খ বনিক কল্যাণ সমিতির আয়োজনে পুরুলিয়া শহরে এই হাট বসে। হাটগ্রামে শাঁখারিরা নানান কারুকাজ করা শঙ্খের পাশাপাশি শাঁখা-র যাবতীয় জিনিসপত্রের পসরা নিয়ে হাজির হন। শঙ্খ দিয়ে যে কতরকমের হস্তশিল্প বা গেরস্থলি সাজানোর জিনিস তৈরি করা যায় তা পুরুলিয়ার এই শঙ্খ হাটে না এলে বোঝা যাবে না। ধূপদানি, চুলের ক্লিপ, কাজলদানি, গলার হার, কানের দুল, শঙ্খ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শো-পিস কী নেই এই হাটে। এই বিষয়ে সমিতির সভাপতি রমেশ দত্ত বলেন, বহু পুরানো এই হাট। তিনি বংশ পরম্পরায় শাঁখার কাজ করছেন। পুরুলিয়ার এই হাটে শুধু জেলার মানুষ নন, অন্যান্য জেলা এমনকি পড়শি রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকেও শঙ্খ বা শাঁখা ব্যবসায়ীরা আসেন যাবতীয় জিনিস কিনতে।
এই হাট এতটাই জনপ্রিয় যে গত ৫ ডিসেম্বর পুরুলিয়া পুলিশ ক্লাব নবরূপে তৈরি হওয়ায় পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সেই ক্লাবের নাম দেয় ‘শঙ্খবেলা’। হাটগ্রামের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য এই হাটের অবদান কম নয়। এ বিষয়ে পাইকারি দরে শাঁখা কিনতে আসা ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি শনিবারই তাঁরা বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরুলিয়ার এই হাটে আসেন শঙ্খের বিভিন্ন জিনিস কিনতে। সমস্ত জিনিসের মান ও দাম দুটোই যথেষ্ট ভাল এই হাটে।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
এই হাট সপ্তাহে একদিন হয়। ভোর ৫-টা থেকে বেলা ১১:৩০ টা পর্যন্ত চলে এই হাট। এই কয়েক ঘণ্টায় বিপুল টাকার বেচাকেনা হয়। বাঁকুড়ার হাটগ্রাম থেকে শাঁখারিরা ছোট গাড়ি ভাড়া করে শনিবারের ভোরে এখানে পা রাখেন। তাই শাঁখার পাইকারি ব্যবসায়ীরাও সেই ভোর থেকে ভিড় জমাতে থাকেন। এই হাটকে ঘিরে জমজমাট হয়ে ওঠে শঙ্খ ব্যবসা।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি