লর্ড কার্জনের কাছে উপস্থাপিত করা হয়েছিল সীতাভোগ এবং মিহিদানা। মিষ্টির স্বাদ গ্রহণ করে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন বড়লাট। সেদিন থেকেই বর্ধমানের সীতাভোগ মিহিদানার জয়যাত্রা শুরু। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তো বটেই, ভিন রাজ্যেও নিয়মিত পাড়ি দেয় এই দুই মিষ্টি। এছাড়া বর্ধমানের সীতাভোগ মিহিদানা বিদেশেও পাড়ি দেয়।
আরও পড়ুন- ত্বকে ফুটে ওঠে কী কী লক্ষণ? রক্তে ‘চিনি’ বাড়লে নিজেই বুঝতে পারবেন…! আপনি কি ‘ডায়াবেটিক’?
advertisement
গোবিন্দভোগ চাল গুঁড়ো করে সেটার সঙ্গে ছানা মিশিয়ে, তারপর তেলে ভেজে নেওয়া হয়। এরপর সেটাকে রসে ডোবানোর পর তৈরি হয় সীতাভোগ। তবে এই শীতের মরশুমে নলেন গুড় দিয়েই সীতাভোগ তৈরি হচ্ছে। কী ভাবে তৈরি হচ্ছে এই নলেন গুড়ের সীতাভোগ? এই বিষয়ে নেতাজী মিষ্টান্ন ভান্ডারের কারিগর রামচন্দ্র দাস বলেন, \”প্রথমে বাজার থেকে কিনে আনা নলেন গুড় গরম করে রাখতে হচ্ছে। তারপর সমপরিমাণে ছানা এবং গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়ো জল দিয়ে মিশিয়ে একটা মন্ড পাকিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপর একটা ফুটো ছাঁকনির মধ্যে দিয়ে সেটা লম্বা, পাতলা আকারে গরম তেলে হালকা করে ভেজে আবার সেটা সেই নলেন গুড়ের রসে ডুবিয়ে রাখতে হচ্ছে। ঠান্ডা হলে রস থেকে তুলে পরিবেশন করা হচ্ছে।\”
শীতের মরশুমে খেঁজুর গুড়ের বিভিন্ন মিষ্টির মত চাহিদা বেড়েছে এই গুড়ের সীতাভোগেরও। বর্ধমান শহরে এখন এই বিশেষ সীতাভোগের চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। অনেকেই দোকানে এসে ভিড় জমাচ্ছেন শুধুমাত্র এই নলেন গুড়ের সীতাভোগের স্বাদ উপভোগ করার জন্য। অয়ন সাহা নামের এক ক্রেতা এই বিষয়ে বলেন, \”সাধারণত সাদা সীতাভোগ খেয়ে থাকি। তবে এইসময় শুধুমাত্র এই নলেন গুড়ের সীতাভোগ পাওয়া যায়। স্বাদ খুবই ভাল।\”
নেতাজী মিষ্টান্ন ভান্ডারের কর্ণধার সৌমেন দাসের কথায়, বছর চারেক ধরে এই গুড়ের সীতাভোগ তৈরি করা হচ্ছে। সর্বপ্রথম কিছু নতুনত্ব তৈরি করার জন্য গুড়ের রসে ডোবানো হয়েছিল সীতাভোগ। তারপর দোকানের সকলে প্রথম স্বাদ নিয়ে দেখেছিলেন। সেই থেকে এখন প্রতিবছর শুধু এই শীতের মরশুমে তৈরি হয় নলেন গুড়ের সীতাভোগ। নেতাজী মিষ্টান্ন ভান্ডারের কর্ণধার সৌমেন দাস বলেন, ৩০০ টাকা কেজি দরে এখন বিক্রি হচ্ছে। আর বর্ধমানবাসী অনেকটাই পছন্দ করছেন এই সীতাভোগ খেতে।সবমিলিয়ে বর্তমানে ভালই বিক্রি হচ্ছে নলেন গুড়ের সীতাভোগ। দূর দূরান্ত থেকেও অনেকেই আসছেন এই সীতাভোগ কিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী