এবছর প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টির ফলে গোটা মাঠ জুড়ে জল কাদা ভোরে রয়েছে। প্রকৃতি না সহায় হলে মিলন মেলা সম্পন্ন হওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই সাঁওতাল সমাজের মানুষ আসতে শুরু করেছেন মেলায়। যুগ যুগ ধরে দশমী শেষে জঙ্গলমহলের বেলপাহাড়ির ওড়গোন্দা ভৈরব মন্দির পরিণত হয় আদিবাসীদের মিলন মেলায়। এ রাজ্যের পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, অসম-সহ বিভিন্ন দেশ থেকেও হাজার হাজার সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ আসেন এই মেলায়।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পিকনিক করতে গিয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! সিলিন্ডার ফেটে জ্বলছে বাড়ি, পুড়ে ছাই, অল্পের জন্য রক্ষা…!
সাঁওতাল সংস্কৃতিতে এটাই কার্যত আদিবাসীদের কুম্ভ মেলা। স্থানীয়েরা একে বলেন পাটাবিঁধা মেলা। দ্বাদশী তিথিতে মেলা শেষ হয়। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সবথেকে জনপ্রিয় এবং প্রাচীন মন্দির হল ওড়গোন্দার ভৈরব মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দা বিমল মুর্মু বলেন, একাদশী ও দ্বাদশীর ওড়গোন্দার বাবা ভৈরব মন্দিরে আন্তর্জাতিক মেলা হয়। নেপাল, বাংলাদেশ থেকেও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর লোকেরা যোগ দেন এখানে।
জনশ্রুতি, প্রাচীনকালে জঙ্গলমহলের সাঁওতালদের বলা হত যদুবংশী। তাদের প্রবল পরাক্রমী রাজা ছিলেন হুদুড়দুর্গা। হুদুড়ের মৃত্যুর পরে যদুবংশী পুরুষদের নির্বিচারে হত্যা করেন দেবাংশীরা। যদুবংশীদের উৎখাত করে এলাকা দখল করে নেন তারা। সেই থেকে দুর্গাপুজোর চারদিন রাজা হুদুড়ের মৃত্যুতে শোকপালন করেন সাঁওতালেরা। শোকাবহ সেই ‘দাঁসায়’ পরবের শেষে দিন গ্রামে গ্রামে পুরুষেরা স্ত্রী সেজে ভিক্ষে চায়। শোকসভার মধ্যে দিয়ে শেষ হয় পরব।