বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম অ্যান্ড আর্ট গ্যালারির ইনচার্জ শ্যামসুন্দর বেরা বলেন, “মিউজিয়াম যখন শুরু হয়েছিল ১৯৬৫ সালে তখন চারটি পাঁচটি মূর্তি নিয়ে শুরু হয়েছিল। যার মধ্যে একটা বৈশ্রবন মূর্তি ছিল।সেটা আমাদের কাঞ্চননগর থেকে পাওয়া গিয়েছিল। যেটা দশম একাদশ শতকের মূর্তি।এটা প্রায় হাজার এগারোশো বছরের প্রাচীন। এটি বৌদ্ধদের দেবতা। বৈশ্রবণ নামটার সঙ্গে হয়তো সবার অতটা পরিচয় নেই।এটা যখন ব্রহ্মণিকাল প্যান্থিয়ানে চলে আসবে তখন সেটা হয়ে যায় কুবের। কুবের নামটির সঙ্গেআমরা সবাই পরিচিত। এই মূর্তি দিয়েই আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল।”
advertisement
বর্তমানে এই সংগ্রহশালায় একাধিক মূর্তি রয়েছে। এখানে জেলা, ভিন জেলা এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নানা প্রত্ন সামগ্রী সংগ্রহীত রয়েছে। সংগ্রহশালায় মূলত নানা ধরনের মূর্তি, রাজ পরিবারের বিভিন্ন ফার্নিচার রয়েছে। বেশ কিছু পেইন্টিংও রয়েছে, যেমন ইউরোপীয় আর্টিস্টদের পেইন্টিং আছে। সবথেকে যেটা উল্লেখযোগ্য সবথেকে বড় যে পেইন্টিং রয়েছে সেটা হল মহারাজা বিজয় চাঁদের রাজ্যাভিষেকের দৃশ্য। এই অনুষ্ঠানটা বর্ধমান রাজবাড়িতেই হয়েছিল ১৯০৩ সালের ১০ফেব্রুয়ারি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম এন্ড আর্ট গ্যালারির ইনচার্জ শ্যামসুন্দর বেরা আরও বলেন, “অবশ্যই সকলের মিউজিয়াম ভিজিট করা উচিত। কারণ আমি আগেই বলেছি মিউজিয়াম একটা ওপেন ইউনিভার্সিটি। এখানে যে সকল মূর্তিগুলি রয়েছে মানুষ সাধারণত মন্দিরে দেখতে অভ্যস্ত। সেই মূর্তিগুলির কাছে যখন আমরা যাই তখন সাধারণত আধ্যাত্মচেতনা নিয়েই যাই। কিন্তু মিউজিয়ামে বিষয়টা একটু আলাদা। আধ্যাত্মচেতনা চেতনার বাইরেও তার যে আইকনোগ্রাফি অর্থাৎ মূর্তি তত্ত্বের যে ব্যাখ্যা, স্থাপত্য ভাস্কর্যের ব্যাখ্যা, পুরাতত্ত্বের ব্যাখ্যা সেগুলি সম্পর্কে মানুষের জানা উচিত। আমাদের হেরিটেজ সম্পর্কেও জানতে হবে। ত ই ছাত্রছাত্রী তো বটেই সাধারণ মানুষেরও আসা উচিত।”
বর্ধমান স্টেশন থেকে কেউ যদি যেতে চান তাহলে রাজবাটি উত্তর ফটক বললেই খুব সহজে পোঁছে যাবেন। তারপর গেটে পাহারাদারদের বললেই তাঁরা মিউজিয়ামের রাস্তা দেখিয়ে দেবেন। প্রবেশ করার জন্য কোনও প্রবেশ মূল্য লাগবে না। প্রত্যেকের জন্যই এই সংগ্রহশালা খোলা। সকলেই সেখানে যেতে পারেন। সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে মিউজিয়াম এবং সরকারি ছুটির দিন শুধুমাত্র বন্ধ থাকে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী