গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, তাঁদের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চেক ব্যবহার করে তিনটি চেকে প্রায় ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের নাগপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এই ঘটনায় বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে পৌরসভা। একইসঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফে মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধা জেলার হিঙ্গালঘাট থানায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মহারাষ্ট্র পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার রাতে বর্ধমান থেকে সমীররঞ্জন মুখার্জীকে গ্রেফতার করে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ বন্যার জলে তলিয়ে মৃত্যু! পরিবারের পাশে সরকার, রাজ্যের তরফে তুলে দেওয়া হল ৫ লক্ষের চেক
মহারাষ্ট্র পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের বয়ানের ভিত্তিতে এবং ঘটনার আগে ফোনে তিনজনের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য পেয়ে এবার সমীররঞ্জনকে গ্রেফতার করা হল। এর আগে সমীররঞ্জন মুখার্জী মহারাষ্ট্রের একটি আদালতে জামিনের আবেদন করেও জামিন পাননি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে পুরসভার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে চেকের মাধ্যমে দু-তিন দফায় ৪৮ লক্ষ, ২১ হাজার ও ৯৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। শেষের চেকটি জমা দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে জানালে বিষয়টি পুরসভার নজরে আসে। এরপরই বর্ধমান পুরসভা বর্ধমান থানায় ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফে মহারাষ্ট্রের হিঙ্গালঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
যদিও পুরসভার দাবি, আসল চেকের পাতা দু’টি তাঁদের অফিসের চেকবুকেই আছে। পুরসভা আরও জানতে পারে, চেকে পুরসভার চেয়ারম্যানের সই রয়েছে। তবে পুরসভার দাবি, অ্যাকাউন্ট হোল্ডার ফিন্যান্স অফিসার ও পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক। চেয়ারম্যান অ্যাকাউন্টটির হোল্ডার না হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে টাকা উঠে গেল সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলে পুরসভা। এমনকি পুরসভার ফিন্যান্স দফতরের দাবি, অ্যাকাউন্টে সমীররঞ্জন মুখার্জীর ফোন নম্বর থাকলেও তাঁর কাছে কোনও ফোন বা টাকা উঠে যাওয়ার পর কোনও এসএমএস আসেনি। এরপর ব্যাঙ্ক বর্ধমান পুরসভাকে ওই টাকা ফিরিয়ে দেয়।
এদিকে মহারাষ্ট্র পুলিশের দাবি, তাঁদের হাতে গ্রেফতার হওয়া তিনজনের সঙ্গে আগে থেকেই সমীররঞ্জনের ফোনে যোগাযোগ ছিল। এরপরই বর্ধমান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, চেক ক্লোন করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও ফোনে যোগাযোগের বিষয় উড়িয়ে সমীররঞ্জন মুখার্জীর আইনজীবী পার্থ হাটি বলেন, হয়তো ফোন ক্লোন করে কথা বলা হয়েছে। এর সঙ্গে সমীরবাবুর কোনও যোগ নেই।