জানা গিয়েছে, জেলবন্দি থাকাকালীন বিহারের ওই দুষ্কৃতী সঞ্জয়কে বলেন, ছোটখাটো কাজ করে লাভ নেই! বড় কোনও কাজে নামতে হবে। এর জন্য যা সাহায্য দরকার তা করার প্রতিশ্রুতিও দেন। তারপর কয়েক মাস আগে জামিনে ছাড়া পেয়ে বাইরে আসে সঞ্জয়। দমদম বেদিয়াপাড়া, সিঁথির মোড় সংলগ্ন অঞ্চল তাঁর নখদর্পণে ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে সুরজিৎ সিকদারকে নিয়ে এই সমস্ত এলাকা রেইকি করে সে। দেখা যায়, দুপুরবেলা এলাকা জনশূন্য হয়ে যায়। সেই সুযোগ নিয়ে শঙ্কর জানার দোকান টার্গেট করে সঞ্জয়। এরপর প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি থাকা বিহারের সেই দুষ্কৃতীকে টার্গেট ‘ফাইনাল’ বলে জানানো হয়।
advertisement
জানা যাচ্ছে, এরপর দিনক্ষণ ঠিক করে বিহারের জেলবন্দী দুষ্কৃতীর নির্দেশে ঝাড়খণ্ড ও জামশেদপুরের দুষ্কৃতীদের ডাকাতির অপারেশনের জন্য কলকাতায় আনা হয়। শঙ্কর জানার দোকানে যেদিন হামলা হয়, সেদিন বাইক নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন সঞ্জয়। হামলাকারী দুষ্কৃতীদের দোকান চিনিয়ে দেয় সুরজিৎ। এরপর সে-ও কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকে। প্ল্যান বাস্তবায়িত করে দুষ্কৃতীরা পিছনের রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে দমদম স্টেশনে ট্রেন ধরে পালিয়ে যায়।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজে সুরজিৎকে দেখতে পান তদন্তকারীরা। এরপর তাঁর নারকেলডাঙার বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুরজিৎকে জেরা করে উঠে আসে সঞ্জয়ের নাম। ডাকাতির অধিকাংশ সোনার গহনা সঞ্জয়ের কাছে ছিল। সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে জেরা করলে পাঁচু সামন্তর নাম সামনে আসে।
জানা যাচ্ছে, ডাকাতি করার সোনার গহনার বেশিরভাগই বরানগর ঘোষপাড়া এলাকার পাঁচুর কাছে বিক্রি করেছিল সঞ্জয়। ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করেছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি শঙ্করকে খুন করে পালানো দুষ্কৃতীদের মধ্যে ২ জনকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ। এখন প্রশ্ন, সঞ্জয়ের কাছ থেকে পাঁচু কেন এই লুঠ করা সোনার জিনিস কিনল? তাহলে কি এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত? সঞ্জয়, সুরজিৎ ও পাঁচুকে এক জায়গায় বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। এরপর এই খুনের ঘটনায় কোন নয়া তথ্য সামনে আসে সেটাই দেখার।