অভিযোগ উঠেছিল, প্রায় ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় মৃতদেহটি প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকলেও রেল পুলিশ এবং রেল কর্মীদের পক্ষ থেকে কোনও সহায়তা মেলেনি। স্টেশন ম্যানেজার তাকে তার স্ত্রীর দেহ সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছিলেন। এরপরেই মনোজ কর্মকার নিজের স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে বহন করে নিয়ে যেতে শুরু করেন। এই দৃশ্য চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল প্লাটফর্ম চত্বরে। স্থানীয়দের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের পর জিআরপি সেই দেহ উদ্ধার করে পুরুলিয়ায় পাঠায়। পুরুলিয়া দেবেন মহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শান্তা কর্মকারের ময়নাতদন্ত হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: হাতের কাছেই এবার ১০০ ফুটের ‘তিরুপতি বালাজি মন্দির’! খরচ লক্ষ লক্ষ টাকা, দেখতে হলে আসতে হবে এই জায়গায়
বুধবার ওই মহিলার মৃতদেহটি পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে নিজের দায়িত্বে নিয়ে আসেন পুরুলিয়া পৌরসভার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করান।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এ বিষয়ে পুরুলিয়া পৌরসভার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালী বলেন, মৃত ওই মহিলার কোনও পরিচয় পত্র ছিল না এবং তার স্বামীরও কোনও পরিচয় পত্র ছিল না। পুরুলিয়া জিআরপি থানার ওসি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানান। এরপর স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি পৌরসভার প্যাডে লিখে দেন ওই মহিলার মৃতদেহ তার স্বামীর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য।
তিনি আরও বলেন, মৃতদেহ সৎকারের জন্য মনোজ কর্মকারের কাছে কোনও টাকা পয়সা ছিল না। তাই তিনি নিজ উদ্যোগে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ সৎকার করার জন্য নিয়ে আসেন এবং নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই সৎকার কার্য সম্পন্ন করেন।
এ বিষয়ে মনোজ কর্মকার বলেন, প্রতিদিনের মতো কাজ করে তিনি ফিরছিলেন। হঠাৎ তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় বরাভূম স্টেশনের স্ত্রীকে নিয়ে নেমে যান। স্টেশনের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার স্ত্রীর। কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। পুরুলিয়া পৌরসভার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালী তার স্ত্রীর অন্তিম সৎকারে সমস্ত ভাবে তাকে সহযোগিতা করেছেন। পুরপ্রধানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন তিনি।
বরাভূম স্টেশনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা সমাজ মাধ্যমের বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাল হয়।জানা যায়, মৃত মহিলা স্বামীর সঙ্গে বোতল কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এই ঘটনার পর রেল পুলিশের মানবিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। অপরদিকে পুরুলিয়া পৌরসভার পুরপ্রধানের এই মানবিক রূপে গর্বিত জেলাবাসী।