সম্রাট অশোকের আমলের পিলগ্রিম রুট এবং ট্রেডরুটের মধ্যে অবস্থিত এই মন্দির। সেকালের উত্তরাপথ থেকে দক্ষিণাপথ যাওয়ার যাওয়ার সংযোগস্থলে পড়ত আজকের বাঁকুড়া জেলা। ফলত ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। তবে এই মন্দির নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে রয়েছে দ্বিমত। বাঁকুড়া থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে দারিকেশ্বর নদীর ঠিক দক্ষিণ তীরে অবস্থিত, সোনাতপল বলে একটি গ্রাম। এই গ্রামেই রয়েছে চিত্তাকর্ষক একটি সূর্যমন্দির। অত্যন্ত আকর্ষণীয় এই মন্দির কিছুটা রহস্যময়ও। রহস্যের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেত্র সমীক্ষক এবং প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে এই মন্দির আসলে একটি জৈন রেখ দেউল।
advertisement
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে বোর্ডটি বাইরে লাগানো রয়েছে সেই বোর্ড থেকে জানা যায় যে এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছে আনুমানিক খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে। ওই সময় তৈরি হওয়া একটি ইটের "রেখা দেউল"। উঁচু ইটের শক্ত একটি ভিত্তি প্রস্তরের উপর তৈরি এই সূর্যমন্দিরের উচ্চতা অন্তত ১২০ ফুট। এত উঁচু প্রাচীন মন্দির এই অঞ্চলে আর কোথাও নেই সেটা হলফ করেই বলা চলে। মন্দিরের গঠনশৈলি দেখে তার অভিনবত্ব অনুমান করা যায়। সর্বাঙ্গে পোড়ামাটির ইটের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব মন্দির দেউলে এরকম দেখা যায় না। পশ্চিমবঙ্গের তিন থেকে চারটি দেউলের গঠন শৈলি এই একই চরিত্রের, এমনটাই বললেন ক্ষেত্র সমীক্ষক।
আরও পড়ুন : ব্লাড সুগারে কি পেয়ারা খাওয়া যায়? এই ফল খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায় চড়চড়িয়ে? জানুন কতটা ক্ষতিকর
তবে খুঁজে খুঁজে এই মন্দির আসতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। পাকা রাস্তা ভেঙে এই গ্রামে প্রবেশ করে, কিছুটা হাঁটা পথ পড়ে। সেই হাঁটা পথ পেরিয়ে মন্দিরের চূড়া লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলেই যেন চোখের সামনে ভেসে উঠবে এক অন্য পৃথিবী। নিজের চোখেই বিশ্বাস করতে পারবেন না যে এত সুন্দর মন্দির রয়েছে বাঁকুড়ায়। সূর্যালোক প্রবেশ করে গর্ভগৃহে। তবে কোনও দেব-দেবী পূজিত হতেন মন্দির স্থাপনকালে, তা জানা যায় না। বর্তমানে ত্রিশূল এবং শিবলিঙ্গ স্থাপন করা রয়েছে।