কালিয়াদহ ও মাকড়দহ এই দুটি পরিখা দ্বারা বেষ্টিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ ময়নাগড়। ময়নাগড়ের ইতিহাস অনেক পুরানো। দুটি বড় পরিখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন এই ভূ-ভাগে রয়েছে নানান ঐতিহাসিক নিদর্শন। বর্তমানে একটা পরিখার ওপর রাস্তা তৈরি হলেও। এখনও একটি পরিখার ওপর কোনও রাস্তা হয়নি। বলা ভাল, এ বিষয়ে রাজ পরিবারের সদস্যরা কোনও পদক্ষেপই গ্রহণ করেননি। আর তার কারণ হল ময়নাগড়ের ঐতিহ্যকে বহন করে নিয়ে চলা। ফলে এখনও ময়নাগড়ের ভেতর রাজ পরিবারের যে সদস্যরা বসবাস করেন তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোলেই নৌকো হয়ে ওঠে যাতায়াতের প্রধান অবলম্বন।
advertisement
আরও পড়ুন: রিমলের ব্যাপক প্রভাব আম চাষে, জামাইষষ্ঠীর আগে পাকা আমে টান
ময়নাগড় রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্যরা ময়নগড়ের ভেতরেই বসবাস করে। তাদের যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা রয়েছে প্রত্যেক বাড়ির। প্রতিদিন দৈনন্দিন কাজে এই নৌকাগুলো তাঁদের যাতায়াতের প্রধান অবলম্বন হয়ে ওঠে। এই বিষয়ে রাজপরিবারের বর্তমান সদস্য কৌশিক বাহুবলীন্দ্র জানান, অতীতের ঐতিহ্য এখনও বর্তমান ময়নাগড়ে। ময়নাগরে রাজ পরিবারের যাতায়াতের সদস্যদের জন্য প্রত্যেক বাড়ির নিজস্ব ঘাট রয়েছে। আর ঘাটে বাঁধা থাকে নৌকো। ময়নাগড়ে প্রতিটি মানুষ এই ডিঙি নৌকো চালাতে জানেন। প্রতিদিন নৌকোয় করে পরিখার জলপথ পেরিয়ে যাতায়াত চলছে। এই ঐতিহ্য আগামীতেও বজায় থাকবে বলে জানান তিনি।
ধর্মমঙ্গল খ্যাত লাউসেনের কাহিনী আজও এখানকার মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। গৌড় থেকে লাউসেন তাঁর রাজধানী ময়নায় স্থানান্তরিত করেছিলেন। হাজার বছর ধরে আজও পূজিত হয় রঙ্কিনী দেবী। ধর্মমঙ্গল কাহিনীকে বাদ দিলেও ময়নাগড়ের বয়স কিন্তু কম নয়। কলিঙ্গ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ‘জলৌতি দণ্ডপাট’-এর অধিকারী ছিল বাহুবলিন্দ্র রাজ পরিবারের পূর্ব পুরুষেরা। ‘জলৌতি দণ্ডপাট’-এর রাজধানী ছিল বালিসিতা গড়। এই বালিসীতা গড় থেকেই ১৫৬১ সালে বাহুবলীন্দ্র রাজপরিবারের পূর্বপুরুষ গোবর্ধননন্দ বাহুবলীন্দ্র প্রথম ময়নাগড়ে রাজধানী স্থাপন করেন। যা আজও মানুষের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
সৈকত শী