কাজ শেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে ভিনরাজ্যে নিয়ে গিয়ে এক কিশোরের উপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল মালিকের বিরুদ্ধে। খেতে দেওয়া ভাত নষ্ট করার কারণেই নাকি লোহার রড দিয়ে মারা হত এই কিশোরকে। দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের ফলে বর্তমানে হাঁটার ক্ষমতা হারিয়েছে এই কিশোর। নির্যাতন এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছায় শরীরের নানান জায়গায় ঘা পর্যন্ত হয়ে গেছে।
advertisement
অবশেষে অবস্থা বেগতিক দেখে ওই কিশোরকে অন্য এক যুবকের সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় মালিক। এমনই এক হাড়হিম করা ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার অন্তর্গত উপলতি এলাকার বছর বারোর এই কিশোরের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, পারিবারিক আর্থিক অনটনের কারণেই অল্প বয়সে পড়া ছেড়ে দিয়ে, শিকারপুরের এক বাসিন্দার মাধ্যমে গুজরাতের রাজকোটে সিটি গোল্ডের কাজে যায় ওই কিশোর। তারপরই সেখানেই চলতে থাকে এই নির্মম অত্যাচার। পরিবারের দাবি, বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার সময়, ছেলের মতো রাখব, কাজ শেখাব, মাসে অল্প কিছু মাইনেও দেওয়ার কথা বললেও ওখানে গিয়েই শুরু করে তার উপর অত্যাচার।
এমনকী পরিবারের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ করতেও দেওয়া হত না। কিশোরের বাবা বিষ্ণু দুর্লভ বলেন, “ছেলে বলেছে ওকে রড দিয়ে মারা হয়েছে। ও নাকি ভাত খেতে পারত না সেই জন্য মারধর করত। পিঠে, মাথায়, গলায় সব জায়গাতেই মেরেছে। ছেলে বলছে ওকে প্রতিদিনই মারত। ফোন করলে মালিক সামনে দাঁড়িয়ে থাকত তাই ও ফোন ভয়ে কিছু বলতে পারেনি।”
কয়েকদিন আগে এক যুবকের সাহায্যে হাওড়া এসে পৌঁছয় এই কিশোর। সেখান থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে তার পরিবারের লোকজন। এরপর মঙ্গলবার তাকে চিকিৎসার জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিশোরের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত মালিকের বিরুদ্ধে কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই কিশোরের পরিবার। সকলেই চাইছেন যেন এই ঘটনায় দোষীর চরম থেকে চরমতম শাস্তি হয়।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী