গত একমাস আগে বনগাঁ থানা এলাকার নকফুল দাসপাড়ার প্রতিবন্ধী এক মেয়ে অভিযোগ জানায় পুলিশে। জানা গিয়েছে, বছর ৩২-এর ওই প্রতিবন্ধী মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাগদা থানার হরিনাথপুর এলাকার যুবক বিষ্ণু দাসের। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে চলাফেরা করতে পারেন না ওই মহিলা, এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেতে গেলে মায়ের কোলই ছিল একমাত্র ভরসা।
advertisement
আরও পড়ুন: কসবা ল’ কলেজ কবে খুলছে? শুক্রবারই হতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, তথ্যপ্রমাণ ঠিক রাখতে বিশেষ নজর
মহিলার মা পরিচারিকার কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালান। প্রায় দুই বছর আগে ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিষ্ণু ও ওই মহিলার। শুরুতে প্রস্তাবে রাজি না হলেও, বিষ্ণুর একাধিকবার ভালবাসা ও বিবাহের প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রেখে সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যান মহিলা। জানা যায়, দুই পরিবারের তরফেও এই সম্পর্কের বিষয়টি জানা ছিল। ধীরে ধীরে বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন বিষ্ণু। এরপর প্রেমিকের অনুরোধে সহবাসেও রাজি হন ওই প্রতিবন্ধী মহিলা।
অভিযোগ, বিষ্ণু দাস প্রেমিকাকে প্রেম ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তাও নেন, যা মহিলা একটি সমিতি থেকে তুলে দেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করেন বিষ্ণু। সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও করেন তিনি। এই অবস্থায় প্রতারণার অভিযোগ তুলে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই প্রতিবন্ধী মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষ্ণু দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে প্রায় এক মাস জেল হেফাজতে থাকার পর এদিন জামিনে মুক্তি পান তিনি। তবে এরপরই ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে।
আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে, জামিন পেয়েই আদালত চত্বরে প্রেমিকার গলায় মালা পরিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বিষ্ণু। সাক্ষী থাকেন উভয়পক্ষের আইনজীবী ও আদালতের কর্মীরা। সিঁদুর দান ও মালাবদলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠান। বিষ্ণু জানান, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, কিন্তু এখন সব মিটে গিয়েছে। আমরা নতুন করে জীবন শুরু করতে চাই। অন্যদিকে, প্রতিবন্ধী নববধূ জানান, এখন ওকে নিয়ে সুখে সংসার করতে চাই। বনগাঁ আদালত চত্বর এদিন যেন এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল।
Rudra Narayan Roy