চুরি করে ঘন ঘন লোকেশন বদলে ধুলো দিত পুলিশের চোখে। ঝাড়গ্রামে চুরির ঘটনায় এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। ওই ঘটনায় এমএ পাশ চোর সৌমাল্য চৌধুরী এবং তাঁর শাগরেদ ভিক্টর ঘোষকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের জেরা করে পুলিশ আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে।
পক্ষাঘাতে আক্রান্ত সৌমাল্যর বাবা। তাঁকে দেখাশোনা করত ভিক্টর। পড়াশোনা মাধ্যমিক। আছে অসীম সাহস। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পটু। দু’জনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। তবে শুধু এই দু’জন নয়। আছেন আরও দু’জন। একজন সঞ্জয় দে। বাড়ি পাঁশকুড়ায়। সেখানেই সোনার দোকান রয়েছে তাঁর। সঞ্জয়ের দোকানেই চুরি করা গয়না বিক্রি করতেন সৌমাল্যরা। এই সঞ্জয়কেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: একটি নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাবে নষ্ট হতে থাকে ফুসফুস! কোন ভিটামিন জানেন? জেনে সতর্ক হোন
তদন্তের স্বার্থে পুলিশ নাম প্রকাশ না করলেও জানা গিয়েছে, এক সুন্দরী মহিলাও সৌমাল্যদের দলে রয়েছেন। তাঁর কাজ ছিল রেইকি করা। কোন আবাসনে সিসি ক্যামেরা নেই, কোন আবাসনের নিরাপত্তা ঢিলেঢালা তা দেখে জানাতেন ওই মহিলা। তার পর কাজ শুরু হত ভিক্টরের। তিনি আবাসনের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়ে আসতেন সৌমাল্যকে।
সৌমাল্যর বাড়ি আসানসোলের বার্নপুরে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা পূর্ত দফতরের প্রাক্তন কর্মী। মা কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করতেন। আসানসোলের নামী স্কুলে পড়শোনা সৌমাল্যর। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকেও ভাল ফল করেছিল সে। এমএ পাশ করার পরই সৌমাল্য রেলে চাকরিও পেয়েছিল। খড়গপুরেই থাকত।
আরও পড়ুন: NIRF র্যাঙ্কিং অনুসারে ভারতের শীর্ষ ১০ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কোনগুলো? সামনে এল তালিকা, দেখে নিন
বিয়ের জন্য মেয়ে দেখাও চলছিল। চাকরি পাওয়ার পরেও বাড়ি গিয়ে মায়ের সমস্ত গয়না চুরি করে বেচে দেয় সে। মায়ের গয়না চুরির ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। সেই ঘটনা শুনে মা আত্মঘাতী হয়েছিলেন। এক সময় চুরির দায়ে রেল সৌমাল্যকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করে।
ঝাড়গ্রাম শহরে আবাসন চুরির ঘটনায় পুলিশ জানতে পেরেছে, ১৮ জুলাই চুরির পর সৌমাল্য ও ভিক্টর ওড়িশার তালসারিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা রাঁচিতে পালিয়ে যান। পরে আবার বাঁকুড়া এসেছিলেন। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে ঘন ঘন লোকেশন বদলে ফেলতেন দু’জন। তাঁদেরকে ধরার পর পুলিশ পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় প্রতাপপুরে মঙ্গলবার রাতে হানা নেয়। সেখানে সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন সৌমাল্য, ভিক্টর, সঞ্জয় তিনজনকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে বিচারক সাতদিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
তন্ময় নন্দী