আমতা ভাতেঘড়ি গ্রামে একটি পাতকুয়ায় পড়ে জখম হয় বন বিড়াল ছানাটি। সোকপিটের সামান্য ফাঁক দিয়ে বনবিড়াল ছানাটি পড়ে যায় ওই কুয়োয়। বিড়াল ছানার শব্দ শুনে এগিয়ে আসেন চিত্তরঞ্জন প্রামাণিক। বেশ কিছুক্ষণ খোঁজার পর সোকপিটের ঢাকনা সরিয়ে জলে ডোবা ও অবস্থায় খুঁজে পান বাচ্চাটিকে। কোনও রকমে সেটিকে জল থেকে তুলে খবর দেন পরিবেশ কর্মী দীপঙ্কর পোড়েল-কে। দীপঙ্কর ততক্ষণাৎ আমতার সাথী সংগঠন ডট ফাউন্ডেশনের সম্পাদক মইদুল আলিকে খবর দেয়। তাঁরা ছানাটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। প্রায় দুদিন জলে পড়ে থাকার কারণে বনবেড়ালের বাচ্চাটি বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। মইদুল আলি তার সহধর্মিণী তাহেরা ইয়াসমিনকে দায়িত্ব দেন বাচ্চাটির প্রাথমিক শুশ্রূষার।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রোজ খালি পেটে ‘এই’ পানীয় মাস্ট, শরীর থেকে টেনে বের করে জেদি ইউরিক অ্যাসিড, হাঁটু-কোমর ব্যথার মুক্তি
তাহেরা দেবী ওই ছানাটির দেহ পরিস্কার করে। প্রাণীটি উদ্ধার করে,গরম দুধ খাওয়ান প্রয়োজনীয় উষ্ণতা প্রদান ইত্যাদি প্রাথমিক কাজগুলো করে বাচ্চাটিকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে একেবারে চাঙ্গা করে তোলেন। এরপর পরিবেশ মঞ্চ দলের সঙ্গে পরামর্শ করে এবং বনদফতরের অনুমতি নিয়ে বাচ্চাটিকে তার স্বাভাবিক বাসস্থানে ও মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা শুরু হয়।
হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য সায়ন দে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। উপস্থিত হন ডট ফাউন্ডেশনের সদস্য লিয়াকত আলি, মহিদুল আলি সহ আরও অনেকে। শুরু হয় মায়ের কোলে শিশু বনবিড়ালকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযান। তারপর কয়েক ঘণ্টা শেষে উদ্দেশ্য সফল হয় তাঁদের।
দীপঙ্কর পোড়েল সহ স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা জানায়, বেশ কিছুক্ষণ বোন বিড়াল ছানাকে নিয়ে স্থানীয় এলাকায় ঘুরে খোঁজ শুরু হয় মা বন বিড়ালের। বনবেড়ালের বাসস্থান চিহ্নিত করা হয়। সেখানে সন্ধ্যের অন্ধকারে খাঁচাসহ বাচ্চাটিকে রেখে কিছুটা দূরে গিয়ে নজর রাখা হয়। এরপর প্রায় ৫ ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করার পর মা বনবিড়াল এসে হাজির হয়।
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই রকম পূনর্বাসন খুবই সদর্থক ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে অভিমত প্রকাশ করেন সায়ন দে। আমতা ইউনিটের কোঅর্ডিনেটর দীপঙ্কর পোড়েল বলেন – আমতায় বনবেড়ালের বাচ্চাকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নজির এর আগে নেই। তাই এই কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এলাকার মানুষও বনবেড়াল সম্পর্কে জেনে ও তার এই পুনর্বাসন দেখে অভিনন্দন জানায় সকল পরিবেশকর্মীদের।
রাকেশ মাইতি





