স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজকুসুম গ্রামের রায় পরিবারের পূর্বপুরুষ এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। পূর্বে জঙ্গলের মধ্যেই মূর্তি এনে পুজোর আয়োজন করতেন তাঁরা। পুজোর পুরোহিত ছিলেন কাঁকসার গোপালপুরের ভট্টাচার্য বাড়ির সদস্য। সেই সময় পুরোহিতকে রীতিমতো লাঠিয়াল সঙ্গে করে নিয়ে জঙ্গলে আনা হত।
আরও পড়ুনঃ ‘খেল- না’! পুরনো দিনের খেলা নিয়ে তৈরি ‘এই’ পুজো মণ্ডপ, দেখেই মন গলে যাচ্ছে ৮০-র দশকের দর্শনার্থীদের
advertisement
গোটা এলাকায় মাঠে ধান চাষ হত, তেমন রাস্তাঘাট ছিল না। তার সঙ্গে এলাকায় ছিল হিংস্র পশুর আনাগোনা। ধান খেতের আল দিয়ে পুরোহিতকে আনা হত। এক বছর প্রবল বৃষ্টিতে মাঠের আল দিয়ে জঙ্গলে যেতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল সকলকে। সেই থেকে পুরোহিত নিজের বাড়িতেই মা কালীর পুজো শুরু করেন। প্রায় ১০০ বছর ধরে কাঁকসার গোপালপুর গ্রামে ওই ভট্টাচার্য পরিবারেই মা কালীর পুজো হয়ে আসছে। অন্যদিকে প্রাচীন রীতি মেনে জঙ্গলের মধ্যেও একটি অদ্ভুত দর্শন গাছের গোঁড়ায় মূর্তি ছাড়াই হতে থাকে পুজো। তবে রীতি অনুযায়ী এই পুজো কালীপুজোর পরের দিন হয়।
রাজকুসুম গ্রামে জঙ্গলের মধ্যে আজও একইভাবে বনকালীর পুজো চলে আসছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি প্রতি বছর বনকালীর স্থানে পুজো দিতে জেলা ছাড়িয়ে ভিনজেলা থেকেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। জঙ্গলের মধ্যে পুজোর আয়োজন হলেও কোনও মূর্তি বা কোনও মন্দির নেই। প্রতি বছরের মতো এই বছরও মহাধুমধামে পুজোর আয়োজন করা হয়। সকাল ১১টায় পুজো শুরু হয়, শেষ হয় দুপুর ২টোয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রাজকুসুম গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দেবীর উপস্থিতি পুজো স্থানের চারিদিকে লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি গাছের গায়ে চোখের আকৃতি দেখা যায়। মানুষ তাঁদের মনস্কামনা নিয়ে আসেন। কেউ পরিবারের সকলের সুখ শান্তি কামনা করতে আসেন, কেউ আবার মনস্কামনা পূরণ হলে পুজো দিতে আসেন। এই পুজোর জন্য কাউকে নিমন্ত্রণ করা হয় না। দেবীর মাহাত্ম্যের কথা শুনে হাজার হাজার ভক্ত প্রতি বছর এই জঙ্গলে ভিড় করেন।