পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের হারামভি গ্রামে আদিবাসীদের বাহা পরব পালন করা হয়েছে। নাচ ও গানের মাধ্যমে মহা ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়েছে বাহা পরব। দামোদর নদীর তীরে ইস্কো কারখানা পার্শ্ববর্তী হারামভি গ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের বসবাস (West Bardhaman)। এখানে বাহা পরব তিন দিন ধরে পালন করা হয়েছে। উৎসবের প্রথম দিনে জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়েছে। বাহা পরবের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দিন জঙ্গল পরিষ্কার করার রীতি রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের। যেহেতু জঙ্গলের ওপর নির্ভর করে মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ হয়, তাই এই ধরনের রীতি প্রচলিত রয়েছে।
advertisement
পরবের দ্বিতীয় দিনে জঙ্গলের গাছকে পুজো করা হয়েছে। গাছ পুজো করার পরে, গাছের ফল খাওয়ার অনুমতি নেওয়া হয়েছে কল্পনার বৃক্ষ দেবতার কাছে। গাছের ফল খাওয়ার অনুমতি নেওয়ার পাশাপাশি গাছের ফুল তুলে তা পুজো করার জন্য অনুমতি নিয়েছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই মূলত বাহা পরব শুরু হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দ্বিতীয় দিনের এই বাহা পরবকে বাহা বঙ্গা বলা হয়। অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিনে ছিল বাহা বাসকি। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে, একে অপরের গায়ে নিয়ম মেনে জল ঢেলে দেওয়া। যদিও বাহা বাসকিতে সবাই সবাইকে জল দিতে পারেন না, এমনই নিয়ম প্রচলিত রয়েছে বাহাকে কেন্দ্র করে।
আরও পড়ুন : ২ বছর পর দোলপূর্ণিমায় আবার ভক্তদের জন্য খুলে গেল বারোবিশা সৎসঙ্গ আশ্রম
দোলযাত্রায় সবাই সবাইকে রং মাখাতে পারেন, কিন্তু বাহা পরবের এই অনুষ্ঠানে সবাই সবার গায়ে জল দিতে পারেন না। বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে তারা নির্দিষ্ট কিছু মানুষের গায়ে জল ঢালতে পারেন বা রং খেলতে পারেন। রং দিয়ে পালিত হয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাহা বাসকি অনুষ্ঠান। যেহেতু আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই সমস্ত মানুষজন প্রকৃতির পূজারী, প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল, তাই তারা প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত জিনিস ব্যবহার করে উৎসবে মেতে ওঠেন।
আরও পড়ুন : কেরলে ২৫ ফুট গভীর গর্তে নেমে কাজ করার সময় মাটি ধসে নিহত ৪ বাঙালি তরুণ
আরও পড়ুন : ভিনগ্রহী থেকে মমি-পিরামিড হাজির সবই, বিনোদনের নতুন ঠিকানা প্রোফেসর শঙ্কু পার্ক
তিন দিনের এই সমস্ত ধর্মীয় আচার শেষে কিছু মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়। আদিবাসী নৃত্য, আদিবাসী গানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় বাহা পরব। সেখানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সকলেই অংশগ্রহণ করেন। মাদলের তালে নেচে ওঠেন, গান করেন। পাশাপাশি উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠেন।
(প্রতিবেদন : নয়ন ঘোষ)