বিদ্যাধরী নদীর তীর ঘেঁষা এই অঞ্চলেই এক সময় প্রকৃতির ভয়াল রূপে বিধ্বস্ত হয়েছিল সুন্দরবন। কথিত আছে, তখনই এক সাধুবাবা জঙ্গলের মঙ্গল ও সুন্দরবনকে রক্ষা করতে অরণ্য দেবীর আরাধনা শুরু করেন। সেই যজ্ঞ থেকেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে অরণ্য কালীর মন্দির। গ্রামবাসীর বিশ্বাস, মা অরণ্য কালী অত্যন্ত জাগ্রত। যিনি এক মনে কিছু প্রার্থনা করলে, তা পূর্ণ করেন। পুজোর দায়িত্ব বহু প্রজন্ম ধরে বহন করে আসছে গ্রামেরই ভট্টাচার্য পরিবার। তাদের উদ্যোগেই আজও টিকে আছে এই প্রাচীন ঐতিহ্য।
advertisement
আরও পড়ুন : এখানে গেলে দেখতে পাবেন দেবীর শিরা, ধমনী সহ কঙ্কালসার রূপ! পুজো হয় উগ্র চামুন্ডা মতে
একসময় কথিত ছিল, শ্যামাপুজোর রাতে দক্ষিণরায় অর্থাৎ বাঘ নেমে আসত এই মন্দির চত্বরে। তাই সন্ধ্যা নামার আগেই শেষ হতো পুজোর সমস্ত আচার। আজও সেই কাহিনি গ্রামবাসীর মুখে মুখে ফিরছে, গল্প হয়ে বেঁচে আছে বিশ্বাসে। এই পুজোর আর একটি বিশেষ রীতি, প্রতিমা শ্যামাপুজোর রাতে প্রতিষ্ঠিত হয়, তা সারা বছর পুজিত হয়। পরের বছর নতুন প্রতিমা স্থাপনের আগে, পুরনো প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় এক সপ্তাহ আগে। ওই এক সপ্তাহ ধরে চলে তামার ঘটে পুজো। এরপর ফের প্রতিষ্ঠিত হন মা অরণ্য কালী, শুরু হয় নতুন পুজো পর্ব।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
শ্যামাপুজোর রাতে মন্দির প্রাঙ্গণ পরিণত হয় উৎসবমুখর আঙিনায়। প্রচুর পাঁঠা বলি, ফল বলি, আর খিচুড়ি ভোগের আয়োজন চলে রাতভর। শুধু খলিসাদি নয়, আশেপাশের গ্রাম, এমনকি দূরদূরান্ত থেকেও ভক্তরা ছুটে আসেন মায়ের দর্শনে। অরণ্য কালী মন্দির শুধু একটি ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, এটি সুন্দরবনের ইতিহাসের এক জীবন্ত অধ্যায়, যেখানে প্রকৃতি, বিশ্বাস ও ঐতিহ্য একসূত্রে বাঁধা।