আমলাশোল গ্রামে প্রধানত লোধা-শবর ও মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। রাজ্যের পালাবদলের পর আমলাশোলে তৈরি হয়েছে ঢালাই ও পিচ রাস্তা। পানীয় জলের সরবরাহ ও শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে শিশু উদ্যান। রয়েছে প্রাইমারি স্কুল। একটা গ্রামের যা থাকা প্রয়োজন সবকিছুই রয়েছে আমলাশোলে। কিন্তু কর্মসংস্থানের বড্ড অভাব আমলাশোলের বাসিন্দাদের। অনেকেই বাইরে কাজ করতে যায়। কেউ আবার জঙ্গলের উপর নির্ভর করেই সংসার চালায়। জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে বন দফতরের বাধার মুখেও পড়তে হয় গ্রামবাসীদের।
advertisement
পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা আমলাশোলের রুক্ষ মাটিতে বছরে কেবলমাত্র বর্ষার সময়ে ধান চাষ করা হয়। বাকি সময় তেমন একটা চাষবাস হয় না। কিন্তু পাহাড়ের কোলে রয়েছে প্রচুর বাবুই ঘাস। সময়ের সাপেক্ষে নিজেদের বদলে ফেলে বাবুই ঘাস সংগ্রহ করে তা দিয়ে দড়ি তৈরি করছে আমলাশোল গ্রামের বহু শবর পরিবার। তাঁদের তৈরি করা বাবুই দড়ি বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায় মহাজনেরা। কখনও আবার গ্রামীণ হাটে গিয়েও বিক্রি করে তাঁরা।
আরও পড়ুন : পাতার ঝরার মরশুম শেষে বসন্তের আগমন, মাঘ অবসানে পার্বণ আদিবাসী সমাজের
আমলাশোল গ্রামের বাসিন্দা বেদনা শবর তাঁর মেয়ে শান্তি শবরকে নিয়ে বাড়ির উঠোনে বাবুই দিয়ে পাকাচ্ছিলেন বাবুই দড়ি। বেদনা বলেন,”জঙ্গল থেকে বাবুই ঘাস নিয়ে এসে তৈরি করছি বাবুই দড়ি। কয়েক বছর হয়েছে বাবুই দড়ি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছি।” আমলাশোল গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের ভাল রাস্তা তৈরি হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন কর্মের সংস্পর্শে এসে দিনের পর দিন স্বনির্ভরতার পথে এগোচ্ছে অনাহারে আমলাশোল। যদিও অনেকের দাবি রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি আমূল পরিবর্তন এনেছে আমলাশোল গ্রামে।