দু’বছর পর ১৮৬৮ সালে ব্রিটিশ সরকার এই সংস্থাটির কার্যভার নিয়ে নেয়। নতুন করে ক্যানেলটির নাম দেওয়া হয় ‘ইরিগেশন অ্যান্ড নেভিগেশন’। ঠিক তিনবছর অর্থাৎ ১৮৭১ সাল নাগাদ ক্যানেলটিতে বিভিন্ন স্থানে লকগেট নির্মাণ করে নৌকা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর থেকেই হাওড়া থেকে লঞ্চ পরিষেবা শুরু হয় মেদিনীপুর পর্যন্ত। তবে তা মোটেই একটানা ছিল না। প্রথমে সাঁকরাইল থেকে রূপনারায়ণের কাঁটাপুকুর পর্যন্ত। এরপর রূপনারায়ণ পেরিয়ে ওপারে কোলাঘাটের দেনান। তখনও কিন্তু কোলাঘাট চালু হয়নি। এবার দেনান থেকে সোজা মেদিনীপুর যাতায়াত করত সাধারণ মানুষ।
advertisement
আরও পড়ুন: এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভরসা নৌকো! রাজপরিবারে জন্ম নিলে শিখতেই হয় নৌকো চালানো!
এ বিষয়ে পাঁশকুড়ার শিক্ষক তথা আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ রূপেশ সামন্ত জানান, ‘পাঁশকুড়ার ঘোষপুর অঞ্চলে এই আশ্চর্য সেতুটি রয়েছে। যার ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ক্ষীরাই নদীর প্রবাহ এবং নিচে দিয়ে বয়ে গিয়েছে মেদিনীপুর ক্যানেলের প্রবাহ। সেতুটি এমন ভাবে তৈরি দুটো প্রবাহকে আলাদা করে রেখেছে। ১৮৭১ সালে এই সেতু নির্মাণ হয়েছিল। একসময় এই ক্যানেল ছিল সাধারণ মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম। বর্তমানেও এই সেতুটি বিস্ময়কর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ধীরে ধীরে এই মেদিনীপুর খালটিই হয়ে উঠল মেদিনীপুর জেলার মানুষের কাছে জলপথে যোগাযোগের এক মাধ্যম। গোটপোতা গ্রামে ক্ষীরাই নদীর ওপর দিয়েই বয়ে গেছে ক্যানেলটি। নিচে নদী, ওপরে ক্যানাল। সে সময় ব্রিটিশরা যে বিস্ময়কর সেতু নির্মান করেছিল, গোটপোতা গ্রামের সেতুটিই তা প্রমাণ করে। আজও তা দর্শনীয় বস্তু। ক্ষীরাইয়ের উপর ১০ টি খিলান গেঁথে এবং প্রতিটি খিলানে ১২ হাত করে দীর্ঘ পাকা গাঁথুনি গেঁথে তৈরি করা হয়েছে ৫০ ফুট প্রস্থ এবং ১৫ ফুট গভীরতা বিশিষ্ট বিশেষ জলাধার। সম্প্রতি জলাধারটির দক্ষিণ পাড়ের লোক চলাচলের রাস্তাটিকে বিশেষ উপায়ে চওড়া করায় দুর্ঘটনা কমেছে। সেইসঙ্গে বড় গাড়িও যাতায়াত করতে পারছে। বর্তমানে এই আশ্চর্য সেতু দেখতে উৎসাহ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মনে।
সৈকত শী





