পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রতিটি মানুষ লক্ষ্মীপুজোকে নিজেদের আবেগ ও ঐতিহ্যের উৎসব হিসেবে দেখেন। পুরো গ্রামজুড়ে সাজসজ্জার প্রতিযোগিতা, রঙিন আলোর ঝলকানি ও চোখধাঁধানো প্যান্ডেল থাকে। ছোট্ট গ্রাম হলেও পুজোর আয়োজনে কোনও খামতি থাকে না। বর্তমানে গ্রামে প্রায় চারটি বড় পুজো এবং বেশ কিছু ছোট ছোট পুজো হয়। প্রতিটি পুজোতেই থাকে নিজস্ব থিম, মণ্ডপ, প্রতিমা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
advertisement
গ্রামবাসী জগন্নাথ পাল বলেন, “প্রায় ৩০ বছর ধরে আমাদের গ্রামে এভাবেই লক্ষ্মীপুজো হয়। চারদিন ধরে নানা অনুষ্ঠান চলবে। বহু মানুষ গ্রামে পুজো দেখতে আসেন। দুর্গাপুজোর আনন্দ আমরা লক্ষ্মীপুজোয় করি।”
লক্ষ্মীপুজোর দিনগুলিতে বিষ্ণুপুর গ্রাম যেন উৎসবে মেতে ওঠে। চারদিন ধরে চলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। আশেপাশের গ্রাম থেকেও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান। পুজোকে কেন্দ্র করে বসে ছোট মেলা, দোকানপাটে থাকে রমরমা ব্যবসা। আত্মীয়স্বজনেরা দূরদূরান্ত থেকে প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে ফিরে আসেন। এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে, এই গ্রামে কেন লক্ষ্মীপুজোই প্রধান উৎসব? এর উত্তর লুকিয়ে আছে এখানকার মানুষের জীবনযাপনে।
গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ সদস্যই কর্মসূত্রে দেশের নানা প্রান্ত যেমন দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতা বা জয়পুরে থাকেন। দুর্গাপুজোর সময় কাজের চাপে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারেন না। তাই অনেকেই দুর্গাপুজোর আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। সেই অভাব মেটাতে তাঁরা লক্ষ্মীপুজোর সময় বাড়ি ফেরেন। তখনই গ্রামের সকলে একজোট হন এবং দুর্গাপুজোর মতোই ধুমধাম করে লক্ষ্মীপুজো উদযাপন করেন।
গ্রামবাসী অসীম বিশ্বাস বলেন, “আমি নিজে এবং গ্রামের আরও অনেকে বিভিন্ন জায়গায় সোনা-রুপোর কাজ করি। পুজোর সময় আমরা ছুটি পাই না। তাই পুজো শেষে বাড়ি ফিরে আমরা লক্ষ্মীপুজোতেই আনন্দ করি। লক্ষ্মীপুজো হয়ে গেলে আবার যে যার কাজে ফিরে যায়।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অন্যান্য বছরের মতো এবারও গ্রামজুড়ে রয়েছে আলোর ঝলকানি ও উৎসবের মেজাজ। অনেকেই এখানে ভিড় জমাচ্ছেন। বহু মানুষ প্যান্ডেল, প্রতিমা সহ আলোকসজ্জা ঘুরে দেখছেন। সবশেষে বলাই যায়, এখানকার মানুষদের কাছে লক্ষ্মীপুজোই আসলে দুর্গাপুজো।