একুশ শতকের এই দ্রুতগতির সময়ে যখন সবাই শর্টকাট খোঁজে, তখন একুশ বছরের এক যুবক বেছে নিয়েছে এক অসম্ভব পথ। পূর্ব বর্ধমানের দীপ বাগ, মহাদেবের টানে পাড়ি দিচ্ছে এক মহাযাত্রা—২০০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ, তাও আবার হেঁটে নয়, দণ্ডি কেটে! তার লক্ষ্য তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরে অবস্থিত আদিযোগী মহাদেবের কাছে পৌঁছন। তাকে দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ, সবার মুখে একটাই প্রশ্ন ‘পাগল নাকি?’ কিন্তু তারই অসাধ্য সাধনে সবচেয়ে বড় শক্তি তার ভক্তি আর অদম্য জেদ। মহাদেবের ভক্তরা নাকি এমনই হন, আত্মভোলা আর ক্ষ্যাপাটে, এমন ধারণা সবার। তবেই এমন এক আত্মভোলা যুবকের কাহিনী যা দেখলে আশ্চর্য হবেন আপনিও।
advertisement
আরও পড়ুন: ভিড়ে গাদাগাদির দিন শেষ…! চালু হল নতুন লঞ্চ পরিষেবা, পুজোর আগে খুশির খবর বর্ধমানের এই শহরে
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার প্রত্যন্ত গ্রাম সেরুয়া। সেখানকার বাসিন্দা দীপ বাগ, বয়স মাত্র ২১। দীপ জানায়, ছোটবেলা থেকেই সে বাবা মহাদেবের একনিষ্ঠ ভক্ত। মহাদেবের নামেই সে বিভোর। তার এই যাত্রায় বাবা-মায়ের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনও তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি মনোবল পাচ্ছে সে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। দীপের এই যাত্রা শুধু দীর্ঘই নয়, কষ্টসাধ্য। ভাতার থেকে বর্ধমান আসতেই তার সময় লেগেছে ২৩ দিন। আদিযোগীতে পৌঁছতে তার কত মাস বা বছর লাগবে তার কোন হিসেব নেই। দিনের বেলা মাটি মেপে মেপে এগিয়ে চলা আর রাতের বেলা সামান্য বিশ্রাম।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুতে অবস্থিত আদিযোগী শিব মূর্তিটি ৩৫ মিটার (১১২ ফুট) উচ্চতার এক বিশাল ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্য। এটি গিনেজ বিশ্ব রেকর্ডসে ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ আবক্ষ ভাস্কর্য’ হিসেবে স্বীকৃত। দণ্ডি কেটে এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আদিযোগী পৌঁছনোর এমন অভিযাত্রা সম্ভবত এই প্রথম। দীপের এই যাত্রা শুধু এক ভৌগোলিক দূরত্ব অতিক্রম করা নয়, এটি আধ্যাত্মিক নিষ্ঠা এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তির এক উদাহরণ।
সায়নী সরকার