একসময় ‘অধীরের গড়’ বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদে এমন ঘটনা ঘটায় এদিন যন্ত্রণা প্রকাশ করতে দেখা যায় অধীর চৌধুরীকে৷ তিনি বলেন, ‘‘এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে৷ আমি নিজেই এখানকার বাসিন্দা৷ এই জেলাতেই আমার জন্ম, এখানেই বড় হয়েছি, এখানেই রাজনীতি করেছি৷ মুর্শিদাবাদ এমন নয়!’’
অধীর চৌধুরী আবারও বলেন, ‘‘যে মুর্শিদাবাদের কথা বাইরে বলা হচ্ছে, মুর্শিদাবাদ তেমন নয়৷ বাইরে থেকে আসা কোনও তত্ত্ব এখানে কোনও ঘটনা ঘটাতে পারে৷ কিন্তু তা বলে মুর্শিদাবাদ সাম্প্রদায়িক জেলা হয়ে যায় না৷ এটা বাইরে ভুল কথা ছড়ানো হচ্ছে৷’’
advertisement
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় তেতে ওঠা মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হয়েছে। সোমবার থেকে নতুন করে গন্ডগোলের খবর মেলেনি জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান বা সুতি থানা এলাকায়। তবে ওই এলাকাগুলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও বন্ধ।
পুলিশ সূত্রে খবর, আপাতত আরও বেশ কয়েক ঘণ্টা মুর্শিদাবাদের কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে মালদহের দু’টি এবং বীরভূমের তিনটি ব্লকে ইন্টারনেট থাকবে না মঙ্গলবার পর্যন্ত। কারণ হিসাবে প্রশাসনের দাবি, উদ্ভূত গন্ডগোলের অন্যতম কারণ হল ‘গুজব’। সমাজমাধ্যম ব্যবহার করে যা দাবানলের মতো ছড়িয়ে অশান্তিতে উস্কানি দিচ্ছেন কিছু মানুষ। পুলিশের হুঁশিয়ারি, এঁদের কেউ পার পাবেন না। রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিমের কথায়, ‘‘পাতাল থেকেও খুঁজে বার করা হবে (অশান্তি পাকাচ্ছেন বা মদত দিচ্ছেন যাঁরা)।’’ শান্তি বজায় রেখে প্রতিবাদ করতে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
জঙ্গিপুর মহকুমার সুতি, ধুলিয়ান, সমশেরগঞ্জের মতো এলাকায় রবিবার রাত থেকে নতুন করে আর অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনী স্পর্শকাতর এলাকায় রুটমার্চ করছে। গ্রামে গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশও। যাঁরা অশান্তির আবহে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। জেলার বিস্তীর্ণ অংশে এখনও ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। জারি রয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা। এখনও অবধি ২২১ জন গ্রেফতার হয়েছেন।
হিংসার ঘটনায় যাঁদের বাড়ি পুড়েছে, তাঁদের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ি করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এছাড়া, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা৷ যাঁদের দোকান পুড়েছে, খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তাঁদেরও৷