সারা চৈত্র মাস ধরে সন্ন্যাসী সেজে নাচ গান করার পর সংক্রান্তিতে গাজন উৎসব পালন করে থাকেন শিব ভক্তরা। কান্দি রুদ্রদেব মন্দিরেও চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী মরা মাথা নিয়ে নাচ করেন ভক্তরা। কান্দি শহরের প্রাচীন উৎসব বলে পরিচিত এই উৎসবে আরাধ্য হলেন কান্দির গ্রাম দেবতা। ৭০০ বছরের প্রাচীন এই উৎসবে কোথাও যেন মিলেমিশে এক হয়ে গেছে হিন্দু যুগ আর বৌদ্ধ যুগের উৎসব রীতি। প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি ভক্ত এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন।
advertisement
রীতি মেনে মন্দির থেকে রুদ্রদেবকে একদিনের জন্য পালকিতে করে কান্দি শহর পরিক্রমা করানো হয় ও তারপরে হোমতলায় নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। গাজনের জাগরণ রাত্রি থেকে কেউ লাউসেনপাতা, কেউ রুদ্রদেবপাতা, কেউ কালিকাপাতা। এখানে পাতা অর্থে পালনকর্তা। এখানে কোনো দল আসেন ঘোর লাল রঙে নিজেদের আপাদমস্তক রাঙিয়ে। কেউ আসেন কালো রং মেখে। লাল কালো এই দুই রং উপমহাদেশে মাতৃসাধনার সাথে বহুকাল ধরেই নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। আবার সাদা, লাল, কালো, হলুদ ও সবুজ এই পাঁচ রং বজ্রযান ও সহজযানে পঞ্চ কুলের বর্ণও বটে।
ভক্তরা এই রঙের পাশাপাশি নিজেদের সাজান সাদা ফুলের মালায়। আর পরিধান করেন নরকরোটির মালা। গাজন উৎসব উপলক্ষে মূল আকর্ষণ থাকে কঙ্কালের নাচ। মন্দির প্রাঙ্গণে কঙ্কালের দেহাবশেষ নিয়ে শুরু হয় শ্মশান বোলান। ৭০০ বছরের পুরোনো এই উৎসব বাংলার লোকসংস্কৃতিতে এক অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।
কৌশিক অধিকারী