মা কাজ করেন লোকের বাড়িতে, থাকেন ভাড়া বাড়িতে। স্কুলে যাওয়ার থেকে তাই টাকার প্রয়োজনে লোকাল ট্রেনকেই বেশি আপন করে নিয়েছে ১৩ বছরের ছেলেটি। তার কথায়, স্কুলে যাব টাকা কোথায়? তার জায়গায় লোকাল ট্রেনে জিনিস বেচলে হাতে আসে সংসার চালানোর টাকা।
আরও পড়ুনঃ শুধু অসমেই নয়, এ রাজ্যেও রয়েছে দেবী কামাক্ষ্যার ধাম! অম্বুবাচী শেষে চলছে পুজো, কোথায় জানেন?
advertisement
জানা যায়, বর্তমানে চাঁদপাড়ার বাসিন্দা বিক্রমের বাবা একসময় পরিবার ছেড়ে চলে যায়, কারণ, বিক্রমের মা জন্ম দেন কন্যা সন্তানের। সেই থেকেই শুরু হয় এক অসম লড়াই। মা-ছেলে মিলে শুরু করে জীবনযুদ্ধ। তবে ছোট বোনকে আগলে রেখে সংসারের হাল ধরতে গিয়ে স্কুল পড়ুয়া বিক্রম হাতে তুলে নেয় ঝুরিভাজার প্যাকেট। তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বিক্রমের এই লড়াই হয়ে যায় ব্যাপক ভাইরাল। এখন সকাল থেকে রাত, লোকাল ট্রেনই তার বাজার, কামরাই তার দোকান।
বনগাঁ লোকাল হোক বা গোবরডাঙা, হাবড়ার যাত্রীদের ভিড়ই তার বিক্রির ভরসা। তবে সব কামরায় সমান সাড়া না মেলায় এখন বেশি ভাগ সময় লেডিস কামরায় ওঠে। তার কথায়, সাধারণ কামরায় লোকজন তাকে চিনলেও, ফটো তোলেন কথা বলেন। কিন্তু জিনিস তেমন কেনেন না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে লেডিস কামড়ায় মাসিরা বা দিদিরা কিছু না কিছু কিনেই নেন, জানায় বিক্রম।
ভাইরাল ভিডিও ও ফেসবুক পোস্টের হাত ধরে বিক্রমের জীবনযুদ্ধের গল্প এখন ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। লোকাল ট্রেনে ব্যবসা করা অন্যান্য হকাররাও তাই এখন সবরকম ভাবে সাহায্য করে ১৩ বছরের বিক্রেতাকে। তবে সেসব কে সরিয়ে রেখেই লাজুক প্রকৃতির ছেলেটি দিনভর ট্রেন বদল করে এ স্টেশন থেকে ও স্টেশন। দুপুরে পেটের দায়ে কখনও হোটেলে, কখনও কালিদির হোটেলে গিয়ে জুটে যায় এক বাটি ভাত-বিনামূল্যে। জীবনের এমন এক কঠিন বাস্তবতাকে সে যেভাবে মেনে নিয়ে, লড়াই করছে তার জন্য বছর ১৩এর এই খুদেকে কুর্নিশ জানানোই যায়।
Rudra Narayan Roy