এদিন বিচারক আসামীদের সাজা ঘোষণা করেন। প্রসঙ্গত, জানা যায় ২০২৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মাড়গ্রামে বোমা মেরে খুন করা হয় মাড়গ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা ভুট্টু শেখের ভাই লাল্টু শেখ ও তাঁর ছায়াসঙ্গী নিউটন শেখকে এমনটাই অভিযোগ করা হয়।
ঘটনার রাতে জহির শেখ নামে ওই এলাকারই এক কংগ্রেস নেতার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। আর এই ঘটনার পরেই তড়িঘড়ি প্রচুর পুলিশ প্রশাসন সেখানে হাজির হয় এবং নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা।
advertisement
ওই ঘটনার পরের দিন এলাকারই মোট ২০ জন কংগ্রেস ও সিপিএম কর্মীর নামে থানায় এফআইআর দায়ের করেন নিহত নিউটন শেখের দাদা আমিরুল ইসলাম। বীরভূম জেলা পুলিশ প্রশাসন ঘটনার রাতেই অন্যতম অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা সুজাউদ্দিন শেখকে গ্রেফতার করে। এরপরেই একে একে সুজাউদ্দিনের দুই ছেলে লাকি ও বাপি, জহির, ফটিক, শফিক, হীরক, আনারুল, আইনাল, গহ্বর, আকবর ও ছুট মালকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও অন্যান্য অভিযুক্তরা ফেরার হয়ে যায়।
এই ঘটনার পরই গত ২৫ এপ্রিল মাড়গ্রামের হাতিবাঁধা মোড়ে মৃতদের নামাঙ্কিত শহিদ বেদির উদ্বোধন ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে এসে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এসপি, পুলিশ প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম। এর মধ্যে সব অভিযুক্তকে তুলতে হবে এবং কোনও অবহেলা নয়। সুকুমারকে (রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি) দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি, ভাল উকিল বা সরকারি উকিল দিয়ে ভাল করে কেসটা লিখে যেন আদালতে পাঠায়। খুন করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। এই কাজটা আমাদের আইনজীবী সেল নিশ্চিতভাবে দেখবে।”
আরও পড়ুন- টোটো চালাতে পরিবহণ দফতরের বাধা! বড় দাবিতে পৌরসভার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালকদের
পরবর্তী ক্ষেত্রে মামলায় স্পেশাল পিপি নিয়োগ করা হয়। যদিও ফেরার আটজনের এখনো পর্যন্ত কোনও হদিশ পায়নি পুলিশ। অবশেষে খুনের ঘটনার ৮৬ দিনের মাথায় আটজনকে ফেরার দেখিয়ে বাকি ১২ অভিযুক্তর নামে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী অফিসার। ধৃতদের জেলে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চলে।
এর মধ্যে একাধিকবার হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান অভিযুক্তরা। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। বুধবার বিকেলে তিনটে নাগাদ ১২ অভিযুক্তকে সিউড়ি সংশোধনাগার থেকে রামপুরহাট আদালতে নিয়ে আসা হয়। এর পরই এদিন রামপুরহাট মহকুমা আদালতে ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দেন বিচারপতি। এর সাথেই প্রত্যেক জনকে দু লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়। অনাদায়ে ছয় মাস করে জেল হবে এমনও নির্দেশ দেওয়া হয়। মোট চারটি সেকশনে এই রায় ঘোষণা করা হয়।