আধার কার্ড অনুযায়ী তাঁর বয়স প্রায় ১০৪ বছর। ১৯৮৮ সালে ভাইকে খুনের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। খুনের চেষ্টার দায়ে ১৯৯২ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় রসিকের। তখন তাঁর বয়স ৭২ বছর। পরে কলকাতা উচ্চআদালতে জামিন মঞ্জুর হওয়াতে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু, ২৬ বছরের শুনানি শেষে উচ্চআদালত যাবজ্জীবনে সাজা বহাল রাখে। ফলে ২০১৮ সালে ফের জেলে ফিরে যান সেইসময় প্রায় ৯৮ বছরের রসিক।
advertisement
আরও পড়ুন: খুলে যাবে ভাগ্যের বন্ধ দুয়ার, ৮ রাশির বৃহস্পতি তুঙ্গে! ৯৭ দিন ধরে চলবে টাকার বৃষ্টি
কিন্তু, বরাবরই তাঁর ও পরিবারের দাবি ছিল তিনি নির্দোষ। আর এই কারণে জেলা আদালত এবং উচ্চ আদালতের পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা শুরু করেন মানিকচকের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা রসিকের ছেলে পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক উত্তম মণ্ডল। যতবারই জেলবন্দি বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন ততবারই বাড়ি ফেরার জন্য আকুল মিনতি ছিল তাঁর।
জীবদ্দশায় বাবাকে জেলমুক্ত করার সংকল্প নেয় ছেলে উত্তম। ছয় বছর সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের পর মিলেছে জামিনের নির্দেশ। এখনই আর জেলে ফেরার আশঙ্কা নেই। তাই, শতায়ু বাবাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পেরে খুশি পরিযায়ী শ্রমিক ছেলে। গত কয়েক দশকে বাবাকে জেল মুক্ত করতে বিভিন্ন আদালতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে মামলা করতে হয়েছে।
বাড়িতে স্বামী ফেরার অপেক্ষায় ৯২ বছরের স্ত্রী মিনা মণ্ডল। তাঁকে দেখতে ইতিমধ্যেই গ্রামে ফিরেছে বহু আত্মীয়। তবে, চার ছেলের মধ্যে এক ছেলের ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বাবাকে জেল মুক্ত করে বাড়ি নিয়ে গেলেন ছেলে উত্তম। এদিকে অবশেষে জেলের চার দেওয়ালের বাইরে বের হতে পেরে খুশি শতায়ু রসিক। বাকি জীবনটা পার করতে চান পরিবার-পরিজনের সঙ্গে।
সেবক দেবশর্মা, মালদহ।