সাধারণ জলের সঙ্গে ‘কার্বন ডাইঅক্সাইড’ দ্রবীভূত করে তৈরি হয় এই ‘সোডা ওয়াটার’, তবে এ তল্লাটে এই বিশেষ পানীয়টি ‘ফটাস জল’ নামেই বেশি পরিচিত। এই পানীয় মূলত কাঁচের বোতলে ভরেই বিক্রি হয়। ওপেনার দিয়ে বিক্রেতারা বোতলের মুখটি দ্রুত খোলেন, তাতেই পটকা ফাটার মতো একটি আওয়াজ হয়। জানা গিয়েছে, বোতলের মুখ খুলতে গিয়ে এমন আওয়াজের জন্যই এই পানীয়ের নাম হয়েছে ‘ফটাস জল’।
advertisement
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেনে মানুষ কখনও বাদুরঝোলা হয়ে আবার একটু একটু করে ঠেলে ঠুলে ভিতরে প্রবেশ করতে হয় ৷ প্রচণ্ড ভিড় হয় এই দক্ষিণ শাখার ট্রেনে। আর এই ভিড়ের মধ্যে তীব্র গরমে মানুষ যখন হাঁসফাঁস করছে। তখনই হকার থেকে একটা ফটাস জল খেয়ে একটু গলা ভিজিয়ে অনেকটাই তৃপ্তি এনে দেয় যাত্রীদের তবে আইনের বেড়াজালে অবশেষে ট্রেনের মধ্যে এই ফটাস জল বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জেলার এই বিখ্যাত ফটাস জল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়নি। ট্রেন ছাড়া স্টেশন চত্বরে ও বিভিন্ন এলাকায় এই বিখ্যাত ফটাস জলের কিন্তু চাহিদা অনেকটাই বেশি।
ফটাস জল তৈরির ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরে জড়িত সুজাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘প্রধানত ট্রেনের কামরায় রমরমা চলত এই ফটাস জলের ব্যবসা। হঠাৎ নিষেধাজ্ঞায় প্রথমে কিছুটা থমকে গিয়েছিল, তবে এবারের তীব্র গরমে আবারও লাভে মুখ দেখছে এই ফটাস দলের ব্যবসা। বছর খানেক আগেও ২টাকাতেই মিলত এই জল। তবে এখন সব কিছুরই দাম বাড়ার জেরে এর দামও বেড়েছে। বোতল পিছু ‘ফটাস জল’ এখনও ৫ টাকাতেই মেলে। তবে ফটাশ জল শুধু খেলে দাম পড়বে ৫ টাকা। সেই জলে আবার লেবু মিশিয়ে খেতে গেলে আরও পাঁচ টাকা অর্থাৎ মোট ১০ টাকা খরচ করতে হবে।’’
কথায় আছে না দুধের স্বাদ ঘোলে মেটা ৷নো ঠিক তেমনি এই ফটাস জল কিন্তু অনেক মধ্যবিত্ত গরিব মানুষের মধ্যে দুধের স্বাদ ঘোলেও মেটায়। তার কারণ নামিদামি ব্র্যান্ডের কোল্ড ড্রিঙ্কস যারা খেতে পারেন না, তারাই কিন্তু এই ফটাশ জল খেয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান। তবে সেই আগের মত এখনও প্রচুর চাহিদা আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এই ফটাস জলের।
সুমন সাহা