বাংলার অন্যতম প্রাচীন জনপদ জয়নগর। আর এই জয়নগর ও আশপাশের এলাকায় জমিদারির পত্তন করেছিলেন অন্নদাপ্রসাদ মিত্র। সব ঠিকই চলছিল, কিন্তু হঠাৎ এই মিত্র পরিবারের গৃহবধূ ভুবনমোহিনী দাসি স্বপ্নাদেশ পান মা দুর্গার। মিত্রবাড়িতে মা দুর্গার পুজো করতে হবে বলে সেই স্বপ্নাদেশে জানানো হয়। সেই থেকেই জয়নগরের এই মিত্রবাড়িতে পুজো শুরু হয় মা দুর্গার।
advertisement
আরও পড়ুন- অরিজিৎ সিং কত টাকা নেন ‘বিয়ে’-তে গান গাইতে? চমকে যাবেন টাকার অঙ্ক শুনলে
আরও পড়ুন-অকালে চলে গেলেন সলমনের কাছের মানুষ, পুজোর মরশুমে শোকের ছায়া বিনোদন জগতে
বিগত সাড়ে তিনশো বছরের বেশি সময় ধরেই টানা চলছে সেই দুর্গাপুজো।পুজো শুরুর পর থেকে এখনও কোনদিন এই পুজোতে ছেদ পড়েনি। বর্তমানে মিত্রদের বংশধররা পুজোটা করছেন। তবে আগের মতো জৌলুস আর নেই এখন। পরিবারের সকলে কাজের জন্য বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন। তাছাড়া আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেও পুজোর জৌলুসে কিছুটা খামতি হয়েছে। তবে জৌলুস কমলেও এখনও বনেদিয়ানায় শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখেন জয়নগরের এই মিত্ররা।কাঠামো পুজোর মধ্য দিয়ে প্রতি বছর পুজোর সূচনা হয় এই মিত্র বাড়িতে। পঞ্চমীতে অধিবাস থেকে শুরু হয় পুজো। এক সময় পুজোয় প্রতিদিনই মহিষ বলি হত।পরে মোট ন’টা পাঠা বলি হত। তবে এখন মাত্র দুটো বা তিনটে পাঠা বলি হয়। এই বাড়ির পুজোতে কোনও অন্ন ভোগ হয় না। পরিবর্তে লুচি বা শুধুমাত্র ফল, মিষ্টির ভোগ হয়। বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা বাড়ির প্রতিমা গড়ে আসছেন এখানে।
বর্তমানে এই মিত্রবাড়ির বংশধররা কর্মসূত্রে অনেকেই বাইরে থাকেন। কিন্তু পুজোর ক’টা দিন সকলেই উপস্থিত হন এই জয়নগরে। সেখানে এসে একসাথে থাকা, খাওয়া, পুজো দেখা, ভোগ খাওয়ায় অংশ নেন তাঁরা। বিসর্জনে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বাড়ির মহিলারা। সব মিলিয়ে এখনও এই পুজো তাঁদের বনেদিয়ানা ও আভিজাত্যের অন্যতম নিদর্শন।
সুমন সাহা