অনির্বাণ,পৌলমী দু’জনেই খড়্গপুর আইআইটি কৃতি। অনির্বাণ ওই প্রতিষ্ঠান থেকে পিএইচডি করেছেন। পৌলমী সেখানকারই সহায়ক গবেষক ছিলেন। বিষয় ছিল গ্রামোন্নয়ন। সেই সূত্রেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা-বাগান লাগোয়া গ্রামে যাওয়া শিলিগুড়ির অনির্বাণের। এসেছিলেন গ্রামোন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করতে। লক্ষ্য ছিল, গবেষণা শেষে চাকরিবাকরি খুঁজে দেশের অন্যত্র বা বিদেশে গিয়ে থিতু হবেন। কিন্তু সেই গ্রামই কখন যেন ওঁদের দু’জনের জীবনের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে। এখন সব কিছু ছেড়েছুড়ে বন্ধ চা-বাগান লাগোয়া গ্রামগুলি ছাড়া ওঁরা আর কিছুই ভাবেন না। শহর লাগওয়া গ্রামের মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে একইসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন দুজনে। ইতিমধ্যেই মহিলাদের স্বনির্ভর করতে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণও দিয়েছেন তারা।
advertisement
আরও পড়ুন: শুরুতেই সুপার হিট এলআইসি-র এই স্কিম, ১৫ দিনে বিক্রি ৫০ হাজার, আপনি নিয়েছেন?
তাদের লাল গাড়িতে করে বই নিয়ে মোবাইল লাইব্রেরি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল অনির্বাণ পৌলমী। গ্রামে গ্রামে গিয়ে ছোট শিশুদের বই প্রদানের কাজ দিয়ে তারা প্রাথমিকভাবে শুরু করেছিল তারপর তাদের টিউশন পড়ানো, তাদের নানা রকম কম্পিউটার কোর্স করানো শুরু করেন তারা। তারপর মহিলাদের স্বনির্ভর করতে আমরা "ঘরের লক্ষী" বলে একটি প্রজেক্ট শুরু করেছেন তারা । এখানে তারা মহিলাদের মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এখন নিজেদের বাড়িতেই মাশরুম উৎপাদনের বীজ তৈরি করছেন তারা । তাদের ভালোবাসার জেরে আজ একটা গোটা গ্রাম স্বনির্ভর হতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: বয়স ৬০ পেরিয়েও রঙিন মাছ চাষে সফল নন্দীগ্রামের এক মহিলা
অনির্বাণের কথায়, "ভালোবাসা মানেই সাময়িক নয়, কোন কিছুকে ভালবাসতে গেলে তাকে সম্পূর্ণরূপে ভালবাসতে হয়, সবটা দিয়ে ভালো বাসতে হয়।\" আর তাই বিদেশে চাকরির সুযোগ আসলেও সেটা নাকচ করে সমাজকে ভালোবেসে আজও তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। পৌলমী বলেন, \"ভালোবাসা শুধু শহরে নয় গ্রামে গঞ্জে সব জায়গায় ছড়িয়ে থাকে । একটি পরিবার চালাতে পরিবারের সুখ শান্তি বজায় রাখতে, পুরুষ এবং মহিলা দুজনেরই আর্থিক সংগতির খুব প্রয়োজন। তাই আমরা নিজেরাই তাদের প্রশিক্ষণ দিই মাশরুম চাষের। আর সেই গ্রামের মহিলারা মাশরুম চাষ করে সেখান থেকে পয়সা উপার্জন করছে।"
অনির্বাণ রায়