প্রসঙ্গত, ১৩ মার্চ তিস্তা চরের ফায়ারিং রেঞ্জে প্রশিক্ষণ চলছিল সেনার। এরপর ১৪ মার্চ মঙ্গলবার শিলিগুড়ি সংলগ্ন সালুগাড়া রেঞ্জে একটি ১২ বছরের হাতির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। ওই হাতিটিও ফায়ারিং রেঞ্জে জখম হয়েছিল বলে দাবি করেছিল বন দফতর। এরপর উদ্ধার হল আরও দুটি হাতির দেহ। যদিও ফায়ারিং রেঞ্জে সেনার প্রশিক্ষণের ফলে কোন বণ্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়নি বলে দাবি করেছেন উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকরা। অন্যদিকে, বন দফতরের দাবি ফায়ারিং রেঞ্জে ঢুকে পড়াতেই সেনার বোমের সেল ফেটে স্প্রিংটার লেগে ওই হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে। হাতি দুটির শরীরে রয়েছে স্প্রিংটারের ক্ষত। ময়নাতদন্তের সময় হাতি দুটির শরীর থেকে উদ্ধার হয়েছে স্প্রিংটারের অংশ বলেও দাবি করা হয়েছে বন দফতরের তরফে। যদিও ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন বন আধিকারিকরা।
advertisement
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটি হাতির মধ্যে একটি হাতির দেহ উদ্ধার হয়েছে বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের অন্তর্গত তারঘেরা রেঞ্জে। আর অন্যটির দেহ উদ্ধার হয়েছে সাত মাইল রেঞ্জে। বুধবারই ওই দুইটি হাতির দেহ উদ্ধার করে বন কর্মীরা। আর তারপরেই বন আধিকারিকদের মধ্যে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়। উদ্ধার হওয়া হাতি দুটির মধ্যে সাত মাইলের হাতিটি পূর্ণবয়স্ক মহিলা হাতি বলে জানা গিয়েছে।বন দফতরের দাবি, তিস্তা চরে সেনার ফায়ারিং রেঞ্জে কোনভাবে ঢুকে পরে হাতির পাল। সেল ফাটলে তার থেকে স্প্রিংটার বের হয়। সেগুলি কোনভাবে লেগে জখম হয় হাতিগুলি। জখম হতেই হাতিগুলি দিকবিদিকশুন্য হয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। কিছুদূর যাওয়ার পরেই জখম অবস্থায় মৃত্যু হয় তাদের। এদিকে, বন দফতরের দাবি নস্যাৎ করেছে সেনা।
আরও পড়ুন: অরিজিতের সঙ্গে দেখা করলেন মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি! একসঙ্গে জিয়াগঞ্জে দুই বন্ধু!
সেনার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ফায়ারিং রেঞ্জে প্রশিক্ষণের অনেক থেকেই গোটা এলাকা খালি করা হয়। বন দফতরকে পর্যন্ত জানানো হয়। বন দফতর সেইসময় কোন বন্যপ্রানী না থাকলে প্রশিক্ষণের অনুমতি দেয়। আর বন্যপ্রানী থাকলে সেনার তরফে প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখা হয়। এক্ষেতেও সেই সতর্কতাই অবলম্বন করা হয়েছিল। এই বিষয়ে ভারতীয় সেনার কর্নেল অঞ্জনকুমার বাসুমাতারি বলেন, "ফায়ারিং রেঞ্জে প্রশিক্ষণে কোন হাতির মৃত্যু হয়নি। ঘটনাটি কতোটা সত্যি তা তদন্ত করে দেখা হবে।"ফলে ঘটনাটি ফায়ারিং রেঞ্জ কে ঘিরে নাকি এর পিছনে চোরা শিকার বা অন্য কোন কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।রাজ্যের প্রধান মূখ্য বনপাল ( হেড অফ ফরেস্ট ফোর্স) সৌমিত্র দাসগুপ্ত বলেন, "এর আগে একটি এবং আরও দুটি হাতির দেহ উদ্ধার হয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ঠিকই। রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে তদন্ত ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ কোনভাবেই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে সেরকম ঘটনা ঘটলে প্রয়োজনে সেনা ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।"
অনির্বাণ রায়