দারিদ্র উপেক্ষা করেই বিশ্বজিৎ এবার পরীক্ষায় বসেছেন। পরিবারের উপার্জন একমাত্র বাবা উদ্ভব সিদ্ধা, পেশায় পালিশ মিস্ত্রি ও মা জয়া সিদ্ধা বাড়ির কাজ করেন। ২০২০ সালে করোনার প্রকোপের ফলে সমগ্র দেশে লকডাউন চলছিল। তখন কাজ হারিয়ে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সময় পরিবারে হাল ধরতে কাজে বের হয় ছোট্ট ছেলে বিশ্বজিৎ। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।
advertisement
আরও পড়ুন: স্ত্রীয়ের ছবি হাতে খুঁজেই চলেছেন স্বামী, ঘরে কেঁদে অসুস্থ ২ দুধের শিশু!
কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয় বিশ্বজিৎ। খোয়া যায় একটি হাত, তাঁর অপর হাতটিও সম্পূর্ণরূপে অকেজো। তবে হার মানতে নারাজ বিশ্বজিৎ। জীবনযুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য পড়াশোনার প্রয়োজন, সেই কারণে মনস্থির করেন যে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন। এবার মাধ্যমিতে রাইটার নিয়েই পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। তাঁর এই অদম্য প্রয়াসকে উৎসাহ ও মানবিক বল বাড়াতে এগিয়ে আসেন সমাজসেবী গৌতম গোস্বামী ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: রেললাইনের ধারে ওটা কী? সামনে যেতেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য, সিঙ্গুরে চাঞ্চল্য
মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁরা ফুলের তোড়া, মিষ্টির প্যাকেট, পেন, দিয়ে মনোবল বাড়াবার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি, ভাল ভাবে বিশ্বজিৎ যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন তার জন্য একটি টোটোর ব্যবস্থা করে দেন তাঁরা। তাঁদের এমন সহযোগিতায় খুশি বিশ্বজৎ। বিশ্বজিৎ বলেন, 'মনের জোর থাকলেই সব সম্ভব। আজ আমার হাত নেই তবু আমি ভেঙে পড়িনি। আমি পরীক্ষা দেব এবং ভাল ফল করব বলে আশাবাদী।' অন্যদিকে, সমাজসেবী তথা তৃণমুল কমী গৌতম গোস্বামী জানান, ভবিষ্যতে বিশ্বজিৎ যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন সেই দিকে নজর রেখে সর্বদা তাঁর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। বিশ্বজিতের পড়াশোনার সমস্ত খরচ বহন করবেন বলে জানান তিনি।
অনির্বাণ রায়