তমলুকে আসার জন্য সেবার নেতাজি ট্রেনে করে পাঁশকুড়া স্টেশনে নামেন। তারপর ফোর্ড গাড়িতে চড়ে সড়ক পথে তমলুক এসে পৌঁছন। প্রথমে ঠিক হয়েছিল তমলুকে সুভাষের জনসভা রাখাল গ্রাউন্ডে হবে। কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশের বিরোধিতায় সেখানে জনসভা হয়নি। এমনকি সুভাষচন্দ্র বসু যাতে তমলুকের কোথাউই জনসভা করতে না পারেন তার জন্য সচেষ্ট হয়েছিল ব্রিটিশ পুলিশ। তমলুক মহাকুমার কংগ্রেস নেতারা জনসভা সফল করার মরিয়া প্রচেষ্টা চালান। সেই সময় এগিয়ে আসেন তাম্রলিপ্ত নগরীর রাজা সুরেন্দ্রনারায়ণ রায়। তিনি রাজবাড়ির অন্দরমহলের খোসরঙের আমবাগান পরিষ্কার করে জনসভার জায়গা করে দেন। সন্ধের অন্ধকারে হ্যাজাকের আলোয় সেখানেই জনসভা করেছিলেন নেতাজি।
advertisement
আরও পড়ুন: মশারি সাপের হাত থেকেও বাঁচায়, তাই বর্ষা আসার আগেই তৎপরতা শুরু
সেই তমলুক সফরে বর্গভীমা মন্দিরে গিয়ে মায়ের পায়ে দেশের মুক্তি কামনায় পুজো দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। দক্ষিণা স্বরূপ সেবায়েতকে ৫ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। রামকৃষ্ণ মিশন ঘুরে দেখে কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেছিলেন। যা আজও রামকৃষ্ণ মিশনের রেজিস্টারে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্বাক্ষর সহ সযত্নে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
তমলুক পুরসভায় গিয়ে নেতাজি যে চেয়ারে বসে ছিলেন সেটি আজও যত্ন করে রাখা আছে। ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে তমলুক পুরসভা এই বছরও সেই চেয়ারটি যথাযোগ্য মর্যাদায় সাজিয়ে সকলের সামনে নিয়ে এসেছে। তমলুকের আমবাগানে জনসভার পরের দিন নেতাজি কাঁথির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
বর্তমানে তাম্রলিপ্ত পুরসভা ও নেতাজি প্রেমীদের উদ্যোগে তমলুকের যেসব জায়গাগুলি সুভাষচন্দ্র বসু পরিদর্শন করেছিলেন, সেই সকল স্থানে নেতাজির মূর্তি ও স্মৃতিফলক বসানো হয়েছে। প্রতিবছর নেতাজীর জন্মদিনে তাম্রলিপ্ত পুরসভার উদ্যোগে যথাযথভাবে নেতাজি মূর্তিতে মাল্যদান ও নানান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
সৈকত শী