ইতিহাসের পাতা উল্টালে সন্ধান মিলবে প্রায় ৪৫০ বছর আগে পঁচেটগড় রাজবাড়িতে শুরু হয় দুর্গাপুজো। যদিও সেই সময়কাল নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। ওড়িশার কটক জেলার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালুমুরারি মোহন দাস মহাপাত্র। এই দুঃসাহসিক যুবক আকবর বাদশাহের রাজ কর্মচারী ছিলেন।কালুমুরারি পটাশপুর পরগনায় এসে বাদশাহ প্রদত্ত নানকর (বিনা করে) ভূমি লাভ করে জমিদারি সূচনা করেন। প্রথমে কল্যানপুরে বাস করেন। পরে পঁচেট গ্রামে খাঁড়ে বিশাল গড় নির্মাণ করেন তিনি। পরবর্তীকালে সেখান থেকে উদ্ধার হয় এক শিবলিঙ্গ। সে সময় রাজ বাড়িতে শক্তি সাধনা হত। সেই শক্তি সাধনা করতে গিয়ে শুরু হয় দুর্গাপুজো।
advertisement
রাজাদের সেকেলে রাজত্ব আজ আর না থাকলেও রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও রয়ে গেছে সেকালের পুজোর প্রাচীন নিয়ম । প্রতিবছর ষষ্ঠী থেকে রাজবাড়ির পুজো ঢাক, ঢোল, কাঁসর ঘণ্টার ধ্বনি সহযোগে পঁচেটগড় রাজবাড়ির প্রাচীন পুকুর থেকে দুর্গাপুজোর ঘট স্থাপন করা হয়। মূলত ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে রাজবাড়ির পুজো। তবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে এ বাড়ির পুজোয়। কয়েক বছর পর রাজপরিবার শৈব থেকে বৈষ্ণব হয়ে যান। এক অলৌকিক কারনে বন্ধ হয়ে যায় মুর্তি পুজো। জমিদার বাড়িতে শোলা ও পটে আঁকা দুর্গাপুজোর শুরু তখন থেকেই। এখন অবশ্য শোলা বাদ পড়েছে।
আরও পড়ুন: ৩০ টাকার লটারিতে কোটিপতি ফুলবাড়ির শ্রমিক! টাকা জিতেই আতঙ্ক! জানুন
বর্তমানে এই হেরিটেজ রাজবাড়িকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। চাইলেই রাজ বাড়িতে পুজোর সময় ছুটি কাটাতে পারেন। থাকা ও খাওয়া সবই রাজ ঘরনার অনুযায়ী পাবেন। পঁচেট গড় রাজবাড়িতে দু'ধরনের হোমস্টের বন্দোবস্তব রয়েছে। এক মডার্ন হাউস, দুই তিলোত্তমা হেরিটেজ স্যুইট। মর্ডান হাউসের ভাড়া ২,২০০ টাকা। তিলোত্তমা হেরিটেজ রুমের জন্য ভাড়া ৫০০০ টাকা। ভাড়া উভয় ক্ষেত্রে এক দিনের জন্য।ফোনে অগ্রিম বুকিং করে ঘুরে আসুন প্রাচীন জনপদ এই পঁচেট গড়ে। বুকিং এর ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ টাকায় অগ্রিম দিতে হয়।যোগাযোগ: 917044943794, ই-মেইল: enquiry@panchetgarh.com এবং ওবেবসাইট: www.panchetgarh.com
কলকাতা থেকে পঁচেটগড় রাজবাড়ির দূরত্ব মাত্র ১৯০ কিলোমিটার। সহজেই সড়কপথে পৌঁছনো যায় পঁচেট গড় রাজবাড়িতে। কলকাতা থেকে কোলাঘাট ও কাঁথি হয়ে পঁচেটগড় রাজবাড়িতে আসা যায়। বাস কিংবা ছোটগাড়ি করে পঁচেটগড় আসা যায়। পঁচেটগড়ে অবস্থিত অনেক মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে এগরার হাটখোলা মন্দির। ঘুরে আসতে পারেন কাছেপিঠেই মাদুর শিল্পের অন্যতম জায়গা পশ্চিম মেদিনীপুর সবং।
Saikat Shee