তবে শুধুমাত্র যে সাইকেল নিয়ে ঘুরেছে তা কিন্তু নয় । সাইকেল নিয়ে ঘোরার পাশাপাশি ছড়িয়ে চলেছে পরিবেশ রক্ষার বার্তা। এবছর জুলাই মাসের ২০ তারিখে মুর্শিদাবাদ থেকে তিনি তাঁর সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছিল ভ্রমণের জন্য । বর্ধমান শহরে পৌঁছেছিলেন জুলাই মাসের ২৬ তারিখ। তারপর বর্ধমান থেকে বেরিয়ে গিয়ে, ৬৯ দিন পার করে প্রায় ৩৯০০ কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল চালিয়ে অতিক্রম করে আজ ২৭ সেপ্টেম্বর আবার ফিরে আসেন বর্ধমান শহরে।
advertisement
আরও পড়ুন: ধুঁকছে মালদহ আইটি পার্ক! খারাপ যোগাযোগ ব্যবস্থা, সঠিক ভাবে হচ্ছে না কর্মসংস্থান
এই প্রসঙ্গে জোজো বলেন, “আমি বেরিয়েছিলাম সাইকেল চালাও পরিবেশ বাঁচাও মিশন নিয়ে। প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে আমার এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০ জুলাই ২০২৩ সালে। তখন মুর্শিদাবাদ লালগোলা থেকে রওনা দিয়েছিলাম। বর্ধমান শহরে ২৬ শে জুলাই পৌঁছেছিলাম এবং তারপর থেকে ঝাড়খন্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি এবং দিল্লি থেকে আবার হরিয়ানা হয়ে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে আমি আবার যাই উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড। আজ আবার ৬৯ দিনের মাথায় প্রায় ৩৯০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসে পৌঁছেছি বর্ধমান শহরে।”
আরও পড়ুন: আর বাড়ি ফেরা হল না পশু চিকিৎসকের! টোটোর ধাক্কায় রাস্তার মাঝেই সব শেষ
এর আগে জোজো ভারতবর্ষের ১৯টা রাজ্য ঘুরেছেন। তবে সেই সময় লকডাউন থাকার কারণে উত্তরাখণ্ডে তিনি ঘুরতে পারেনি । কিন্তু এইবার তার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এবছর ১৫ অগাষ্ট সে পৌঁছে গিয়েছিল দিল্লি , সেখানে ইন্ডিয়া গেট এবং লালকেল্লার সামনে তিরঙ্গার সঙ্গে ছবি তুলে নিজের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন।
যেহেতু গতবার উত্তরাখণ্ড যেতে পারেনি সেই কারণে উত্তরাখণ্ড হয়ে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড হয়ে আবার আজকে বর্ধমান শহরে আসেন। জোজো জানিয়েছে, তার সাইকেল চালানোর উদ্দেশ্য হল মানুষকে সচেতন করা। সাইকেল চালালে শরীর সুস্থ থাকে , শরীর সুস্থ থাকলে বছরে অন্তত দুবার রক্তদান করা যায়। সেই সঙ্গে সাইকেল চালালে পরিবেশেরও কোনও ক্ষতি হয় না । সাইকেল চালালে স্বাস্থ্য ভাল থাকে । সাইকেল চালানোর উপকারিতা, সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে জোজো সাইকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন।
সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে জোজো বলেন, ” প্লাস্টিক আজ পৃথিবীকে ঢেকে ফেলছে । তাই প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আজকে আমরা প্লাস্টিক ব্যবহারে অভ্যস্ত ঠিকই কিন্তু যতটা সম্ভব প্লাস্টিক এড়িয়ে চলা উচিত। তার সঙ্গে সকলকে অনুরোধ করব শরীর চর্চা করুন। আমি সাইকেলে চালানোর মাধ্যমে করছি, আপনারাও যোগ ব্যায়াম করতে পারেন বা অন্যান্য খেলাধুলার সঙ্গেও নিজেকে যুক্ত রাখতে পারেন।
এই ৬৯ দিনের যাত্রা পথে জোজো কৃষ্ণনগর, কলকাতা, বর্ধমান, দূর্গাপুর, আসানসোল, সাসারাম, বেনারস, এলাহাবাদ, কানপুর, আগ্রা, মথুরা, বৃন্দাবন, দিল্লি, পানিপথ, দেরাদুন, হরিদ্বার, ঋষিকেশ, বরেলি, লখনৌ, অযোধ্যা-সহ আরও বিভিন্ন জায়গা সাইকেল নিয়ে ঘুরেছেন। জোজোর এই সাইকেল যাত্রায় আর্থিক সাহায্য করেছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং পথচলতি বহু সাধারণ মানুষ। আগামী দিনে ভারতবর্ষের আর কিছু রাজ্যে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। বিদেশেও ভ্রমণের ইচ্ছা আছে বলে জানিয়েছে জোজো। ২৭ তারিখ জোজো আবার বর্ধমান শহর থেকে বেরিয়ে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী