বর্তমানে বটুকেশ্বর দত্তের বাড়িটি নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে । এই প্রসঙ্গে বটুকেশ্বর দত্ত ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সদস্য শম্ভুনাথ দাস জানান, ‘‘বর্তমানে একে হেরিটেজ ঘোষণা করে একটা ট্যুরিজমের স্পট তৈরি হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এক বছরের মধ্যে আমরা এটাকে কমপ্লিট করতে পারব। যারা এখানে ঘুরতে আসবেন তাঁদের জন্য এই বাড়ির উপরে গেস্ট রুম করা হয়েছে । ওনাদের থাকা ,খাওয়া সমস্ত সবকিছু ব্যবস্থায় থাকবে। মোটামুটি আমাদের বাজেট ছিল ৮৫ লক্ষ টাকা৷ তার মধ্যে প্রথম লপ্তে ৪২ লক্ষ টাকা এসেছিল, এটা কাজ হয়ে গেছে । দ্বিতীয় বার টাকা আসার পর এটার আবার কাজ আরম্ভ হয়েছে ।
advertisement
সালটা ছিল ১৯২৮। লাহোরে সাইমন কমিশনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভের ডাক দেন লালা লাজপত রায়। তাঁদের এই মিছিল স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ফেলেছিল ব্রিটিশ পুলিশকে। বিক্ষোভ থামাতে লালার ওপর আক্রমণের নির্দেশ দেন ব্রিটিশ অফিসার জেমস স্কট। এই নিন্দনীয় অপরাধের শাস্তি স্বরূপ স্কটকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রাজগুরু, ভগৎ সিংরা। কিন্তু ভুল করে স্কটকে হত্যা করতে গিয়ে স্যান্ডার্সকে হত্যা করে বসেন তাঁরা। এর পরই পাঞ্জাব ছেড়ে পালানো, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এখানে সেখানে লুকিয়ে থাকতে থাকতে অবশেষে বাংলায় পৌঁছন ভগৎ সিং। আশ্রয় নেন বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের জন্মভিটে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের ওঁয়াড়ি গ্রামে।
ব্রিটিশ পুলিশের চর ছিল সর্বত্রই, তাই পঞ্জাব থেকে সুদূর বাংলাতে এসেও লুকিয়ে থাকা সহজ ছিল।এই অবস্থায় তাঁরা আশ্রয় নেন নগেন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে। বটুকেশ্বর জানতেন এই বাড়িতে রয়েছে একটি পাতালঘর। আর সেই পাতালঘরেই এই বিপ্লবীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। খণ্ডঘোষে পুলিশি তল্লাশি শুরু হলেও বিপ্লবীদের খুঁজে বের করতে পারেনি ব্রিটিশরা। তার অন্যতম কারণ এই পাতালঘরটি। তবে বটুকেশ্বর দত্তের বাড়িটি নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হলেও যে বাড়িতে সুড়ঙ্গ রয়েছে অর্থাৎ নগেন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িটি অবহেলিত ভাবেই পড়ে রয়েছে । আগাছাতে ভরে উঠেছে সম্পূর্ণ বাড়ি। ভেঙে গেছে বাড়ির প্রায় জায়গা । এখনও ওই বাড়িতে গেলে সুড়ঙ্গটি দেখা যায় । তবে অতি সত্বর যদি এই বাড়িটিও সংস্কার না করা হয়, তাহলে হয়তো আগামী দিনে সুড়ঙ্গের সঙ্গে হারিয়ে যাবে স্বাধীনতার এক বড় ইতিহাস।