গ্রামবাসীরা জানালেন, এই গ্রামে তাপস মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি থাকতেন৷ যিনি ছিলেন মঙ্গলকোটের মাথরুন স্কুলের হেড ক্লার্ক। স্থানীয়দের মতানুযায়ী, তাপস মণ্ডল প্রথম থেকেই ঠাকুর ভক্ত ছিলেন। হঠাৎ, একদিন ভালুগ্রামের এই তাপস মণ্ডলের সঙ্গে লাখুরিয়া গ্রামের এক তান্ত্রিকের দেখা হয় এবং তিনিই তাপস মণ্ডলকে নির্দেশ দেন এই গ্রামে তারা মায়ের প্রতিষ্ঠা করতে।
advertisement
সেইমতো, তাপস মণ্ডল নিজ উদ্যোগে মা তারার মূর্তি বানিয়ে নিয়ে এসে এই গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন ও পুজো অর্চনা শুরু করেন। তারপর থেকে এই গ্রামে শুরু হয় তারা মায়ের পুজো। তবে, পরবর্তীকালে আনুমানিক ১২ থেকে ১৩ বছর আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে, ভালুগ্রামের এই তারা মায়ের মন্দিরের ঘরের মধ্যেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন মাথরুন স্কুলের সেই হেড ক্লার্ক।
যে ব্যক্তির হাতে মন্দির প্রতিষ্ঠা, তাঁর এই কর্মকাণ্ডে কিছুটা ভয় পেয়েছিলেন গ্রামবাসী৷ তখন কয়েক মাস বন্ধ ছিল এই মন্দির। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে এই পুজো পুনরায় শুরু করেন। সেই থেকে আজও কৌশিকী অমাবস্যার দিনে, এই গ্রামে জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয় তারা মায়ের পূজো।
এই প্রসঙ্গে এক গ্রামবাসী জানান, ‘‘পুজোটা কিছু দিনের জন্য বন্ধ ছিল তখন। কিন্তু পরবর্তীতে গ্রামবাসীরা সকলে মিলে আলোচনা করে এই পুজো পুনরায় শুরু করেছে। আজও পুজো অর্চনা চলছে। উনি খুব জাগ্রত তারা মা।’’ কৌশিকী অমাবস্যাতেও প্রতিবছর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গ্রামবাসী। দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষের সমাগম হয় এখানে।
প্রতিবছর কৌশিকী অমাবস্যার দিনে ভালুগ্রামে তারা মায়ের পূজো উপলক্ষে আশপাশের গ্রাম থেকে বহু ভক্তরা আসেন। মঙ্গলকোটের স্বনামধন্য মোট চারজন পুরোহিত মিলে মায়ের পূজো করেন। রাত অবধি চলে মায়ের পূজো। এই পুজো উপলক্ষে গ্রামবাসীরা প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও জনসাধারণের জন্য প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করেছেন।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী