গ্রামের নাম ক্ষীরগ্রাম। বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার মঙ্গলকোট থানার এই জনপদ ঘিরেই থাকে দেবী যোগাদ্যা। অন্তত ৪০টি যোগাদ্যা বন্দনা পুঁথি পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। তবে জানা যায়, সবথেকে আগে যোগাদ্যা বন্দনা লিখেছিলেন কবি কৃত্তিবাস। কবির মতে, রামায়ণের সময় কালে মহীরাবণ বধের পরে তাঁরই পূজিতা ভদ্রকালী বা যোগাদ্যাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেন রামচন্দ্র। ক্ষীরগ্রামের পশ্চিমে রয়েছেন দেবী যোগাদ্যা উমা অর্থাৎ সিংহপৃষ্ঠে আসীন কালো কোষ্ঠীপাথরের দশভূজা মহিষমর্দিনী। মন্দির লাগোয়া ক্ষীরদীঘির জলেই দেবী যোগাদ্যার বাস। মন্দিরে রয়েছে প্রবেশমণ্ডপ, তার পরে রয়েছে গর্ভগৃহ। তবে মন্দিরে কোনও বিগ্রহ নেই।
advertisement
আরও পড়ুনঃ Purba Bardhaman: নতুন সেতু তৈরিতে উদ্যোগী পূর্ত দফতর, খুশি স্থানীয়রা
কারণ দেবীর বাস তো ক্ষীরদীঘিতে। গর্ভগৃহের দেওয়াল ঘেঁষে বেদী। সেই বেদীতেই দেবীর নিত্যপুজো হয়। মন্দির থেকে অদূরে একটি টিলার উপর দেবীর ভৈরব ক্ষীরকণ্ঠ শিবের মন্দির। তাই এই গাঁয়ের নাম ক্ষীরগ্রাম, আদরের ক্ষীরগাঁ। মন্দির আর ক্ষীরদীঘি থেকে খানিকটা দূরে গ্রামের এক প্রান্তে ধামাসদীঘি। পুরাণে আছে, ওই দীঘির ঘাটেই যুবতীর বেশে শাঁখা পরেছিলেন উমা। সেই থেকে দেবী বৈশাখের উৎসবে শাঁখা পরেন যোগাদ্যা। আর শাঁখা পরেন ক্ষীরগ্রামের এয়ো বধূরাও। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বসে মেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ভক্তের ঢল নামে পুণ্যস্থল ক্ষীরদীঘির পাড়ে। প্রতিবছরের মতো এবছরও ৩১শে বৈশাখ ধুমধাম সহকারে পালাতি হল ক্ষরীগ্ৰামে য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো।
আরও পড়ুনঃ Purba Bardhaman: এক নজরে দেখে নিন কান্দরা রাধাকান্ত কুন্ডু মহাবিদ্যালয়ের কোর্সগুলি
এই ঐতিহ্যবাহী পুজোকে ঘিরে ক্ষীরগ্ৰাম এখন মেতে রয়েছে উৎসবের আমেজে। পুজো উপলক্ষে বসেছে বড় মেলা। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রচুর দর্শনার্থী এসেছেন য্যোগাদ্যা দেবীর দর্শনে। য্যোগাদ্যা দেবীর পুজো উপলক্ষে বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী উদ্যোগ ও ক্ষীরগ্ৰাম অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সহযোগিতায় দর্শনার্থীদের জন্য জলের আয়োজন করা হয়েছে। কৈচর রায়স মিলের পক্ষ থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষের দুপুরে অন্ন ভোগ খাওয়ানো ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Malobika Biswas