বর্তমানে যাত্রা শিল্পের জায়গা দখল করেছে অর্কেস্ট্রা, লেটো গান ইত্যাদির মত চটকদার অনুষ্ঠানগুলি। তবে এখনও অনেকেই আছেন যারা যাত্রাপ্রেমী। এই সংখ্যাটা কম হলেও, শুন্য হয়নি এখনও। যাত্রাপ্রেমীদের কথা মাথায় রেখেই এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি নাট্য সংস্থা। গ্রামের একদকল ছাত্রী চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়ম করে পালার মহড়া। দলটিতে মোট রয়েছে ১৮ জন মহিলা শিল্পী। নাট্য সংস্থার ম্যানেজার তন্ময় ঘোষাল জানান, এই যাত্রা শিল্পকে আমরা মুছতে দেবনা। আমাদের দলে সব মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন আছে । ৯০ এর দশকের আগে থেকে এটা আমাদের গ্রামে চলছে। আমাদের দেখে সকলে এগিয়ে আসুক , ইন্সপায়ার হোক।
advertisement
আরও পড়ুন: ধবধবে সাদা চুল, কালো ফ্রেমের পুরু চশমা, আজও হাত চলে এক সাবলীলতায়
স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাতো রয়েছেই, তার পাশাপাশি এই দলে নাম লিখিয়েছে গ্রামের শিশু থেকে গৃহবধূ অনেকেই । পুরুষদের চরিত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে ফুটিয়ে তুলতে দিনরাত চলছে মহড়ায়। নিজেদের গ্রাম ছেড়ে দূর-দুরান্তে গিয়েও যাত্রাপালা করে তাদের প্রতিভা সকলের সামনে তুলে ধরছেন তারা।
মহিলা শিল্পী মৈত্রী ঘোষাল বলেন,আমি ইংরেজি নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করি । আমার মনে হয় মানুষের মনের অভিব্যক্তি সমস্ত আর্টের মাধ্যমেই প্রকাশ করা যায় । আর অভিনয় এমন একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে সকলের কাছেই পৌঁছানো যায় খুব সহজেই । তাই আমি অভিনয়কেই বেছে নিয়েছি আমার ভিতরের এক্সপ্রেশনকে প্রকাশ করতে।
আরও পড়ুন: ‘পালকিতে বৌ চলে যায়’, এখন গানের কথা নয়, অটুট প্রথা বর্ধমানের এই গ্রামে
আধুনিক সমাজে মহিলারা আর পিছিয়ে নেই। শিক্ষা, গুণে, মানে সব ক্ষেত্রেই পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে মহিলারা। সেরকমই পুনশুর গ্রামের মহুয়া, মৈত্রী, স্নেহার মত পড়ুয়ারা যাত্রা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পুরুষদের চরিত্রে ধারাল অভিনয় করে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তারাও কোনও অংশে পিছিয়ে নেই।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী