দিদির কোনও হেলদোল নেই। চোখমুখ শান্ত। সেখানে শোকের লেশমাত্র দেখা যাচ্ছে না। হাতে মোবাইল ধরে ভিডিও বানাচ্ছেন তিনি। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করবেন। ভিউজ আসবে। এই চিন্তাতেই যেন মগ্ন।
advertisement
দেখে শুনে মনে হবে, ভাইয়ের মৃতদেহ তাঁর কাছে ‘কনটেন্ট’ মাত্র, তার বেশি কিছু নয়। তিনি ভিউজের নেশায় মত্ত। নেটিজেনরাও বলছেন এ কথাই। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, “মানুষ কী এতটাই নিষ্ঠুর হয়ে গিয়েছে?”
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটা ছোট ঘর। দেওয়ালের কুলুঙ্গিতে বাসনকোসন রাখা। তার সামনেই শায়িত একটি মৃতদেহ। সাদা চাদর ঢাকা। এটাই তাঁর ভাই। পাশে আকুল নয়নে কাঁদছেন ঘোমটা দেওয়া এক মহিলা। তিনি বৌদি। ভিডিওতে নিজেই এই সব সম্পর্কের কথা জানিয়েছেন ওই মহিলা।
ওই মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। কোথাকার ঘটনা তাও স্পষ্ট নয়। তবে ভিডিও দেখে ক্ষভে ফেটে পড়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা। কমেন্ট সেকশনে অনেকেই লিখেছেন, ‘‘নির্লজ্জতার চূড়ান্ত।’’ আবার অনেকের দাবি, ‘‘মানুষ বোধহয় এমনই।’’
আরও পড়ুন– রঙ বদলানো দুর্দান্ত স্মার্টফোন! Realme 14 Pro সিরিজের বিক্রি শুরু, ফিচার ও দাম দেখে নিন
এক ইউজার লিখেছেন, ‘‘আপনি দিদি? কেমন দিদি! নিজেকে দিদি বলতে লজ্জা করছে না আপনার?’’ আরেকজন লিখেছেন, ‘‘কটা ভিউজের জন্য এতটা নীচে নামতে পারলেন? আর কী করবেন আপনি?’’
অনেকে আবার দুষেছেন সমাজকে। তাঁদের দাবি, সমাজ ব্যবস্থাটাই পচে গলে গিয়েছে। এগুলো সেই দুর্গন্ধ। এটাই হয়তো ভবিতব্য। হতাশ হয়ে কেউ কেউ লিখেছেন, “কিছু করার নেই। কোনও পারফিউমেই এই দুর্গন্ধ কাটবে না। আমাদের সহ্য করতে হবে।’’
তবে এমন ‘‘নির্লজ্জতা’’ আগেও দেখা গিয়েছে। রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা ঘটলে আহত ব্যক্তিকে সাহায্য করার বদলে মানুষ আগে মোবাইল বের করে। ভিডিও তোলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। তাঁর কাছে ওটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বোঝা যায়, মানুষের মূল্যবোধ বদলে গিয়েছে।
কিন্তু ঘরের লোক, নিজের লোক, যাঁদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক, তাঁদের কিছু হলে মানুষ এতটা নির্বিকার থাকতে পারে? কী করে? ভাইয়ের মৃত্যুতে দিদি রিলস বানাতে পারে? কী করে? এমন সম্পর্কহীন, মনুষ্যত্বহীন দুনিয়ার দিকেই কী এগিয়ে যাচ্ছে মানবসমাজ? প্রশ্ন তুলেছেন এক সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার।