পূর্ব আফ্রিকার ইথিওপিয়ায় বাস মুরসি উপজাতির। মূলত দক্ষিণ ইথিওপিয়া এবং সুদানের সীমান্তে অবস্থিত ওমান উপত্যকাই হয়ে উঠেছে এঁদের বাসস্থান। mursi.org ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে মুরসি উপজাতির মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।
আরও পড়ুন– বিমানের মধ্যেই বিজনেস টাইকুনের হাতে ধরানো হল চিরকুট; কী লেখা ছিল তাতে?
আফ্রিকার সর্বশেষ উপজাতির মধ্যে অন্যতম মুরসিরা এখনও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী সাজপোশাক এবং রীতিনীতি ধরে রেখেছে। আর মুরসি উপজাতির মহিলাদের ভিড়ের মধ্যে আলাদা ভাবে চেনারও একটা উপায় রয়েছে। মুরসি রীতি অনুযায়ী, ওই উপজাতির মহিলাদের ঠোঁট কেটে ঢোকানো থাকে বড় বড় কাঠের পাত কিংবা চাকতি।
advertisement
আসলে মেয়েরা ১৫ অথবা ১৬ বছরে পা রাখার পরে তাঁদের নিচের ঠোঁট কেটে দেওয়া হয়। যখন এটির নিরাময় হয়, তখন একটি সিক্ত প্লাগের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ রূপে খোলা রাখা হয়। আর ঠোঁটটা কতটা ঝোলানো হবে, সেটা নির্ভর করে মেয়েটির মতামতের উপর। এই যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া চলতে থাকে বেশ কয়েক মাস ধরে। আবার শোনা যায় যে, বিবাহিত কিংবা বয়স্ক মহিলাদের তুলনায় অবিবাহিত এবং কমবয়সী মহিলাদের মধ্যে এই রীতি মেনে চলার ঝোঁক বেশি থাকে। ঠোঁটের এই পাতগুলি মূলত তাঁরা পরেন বিয়ে, গরুর দুধ দোয়ানোর মতো শুভ অনুষ্ঠানে।
কিন্তু ঠোঁটের এই পাতের তাৎপর্য ঠিক কী? আসলে বিভিন্ন ধরনের অর্থ ও গুরুত্ব রয়েছে ঠোঁটের এই পাতের। তার মধ্যে অন্যতম প্রচলিত বিশ্বাস হল, মহিলাদের ঠোঁটের পাত সৌন্দর্যের প্রতীক। মহিলারা যখন নিজের স্বামীকে খাবার পরিবেশন করেন, তখন তাঁরা গর্বের সঙ্গে এই অলঙ্কার ঠোঁটে সাজিয়ে নেন। এর অর্থ হচ্ছে, ওই মহিলা তাঁর স্বামীর প্রতি গভীর ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে স্বামীর মৃত্যু হলে ঠোঁটের এই পাত খুলে রেখে দেন মুরসি উপজাতির মহিলারা। এছাড়া, ঠোঁটের চাকতি বা পাতের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থ রয়েছে। এটি মুরসিদের পরিচয়ের অন্যতম বড় প্রতীক।
তবে মুরসি উপজাতি কিন্তু বেশ হিংস্র প্রকৃতির হয়। এমনকী বিনা অনুমতিতে কেউ তাঁদের এলাকায় প্রবেশ করলে তাঁরা সেই ব্যক্তিকে হত্যা পর্যন্ত করতে পারেন। ফলে এই উপজাতি এলাকায় পর্যটকরা প্রবেশ করার অনুমতি পান না। শুধু তা-ই নয়, মুরসিদের এ হেন মনোভাবের কারণে ইথিওপিয়া সরকারও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।