এখন রীতিমতো ভাইরাল সে। ছোটবেলা থেকেই সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে প্রতিনিয়ত যাতায়াত। জঙ্গলের পশু পাখিদের ডাক কানে যেন সবসময় ভেসেই থাকত। আজ সেই ছেলেই হয়ে উঠল সুন্দরবনের ছোট্ট টারজান। তাঁর গলায় যেন যাদু রয়েছে। কখনও তাঁর কন্ঠে শোনা যায় কোকিল, ময়ূর, ব্যাঙ, বা হাঁসের ডাক। আবার কখনও শিয়াল কিংবা কুকুরের ডাক অনুকরণ করতে পারে বছর বারোর ছেলেটি। আর এমনই আওয়াজ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন সুন্দরবনে পশু পাখিদের নিত্যদিনের সঙ্গী নবারুণ।
advertisement
কখনও খাবার দেওয়ার জন্য ডাক আবার কখনও সঙ্গী হওয়ার জন্য তাঁদের সঙ্গে কণ্ঠস্বরের সঙ্গতে মেতে উঠেন ছোট্ট নবারুণ। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের পশ্চিম খেজুরবেড়িয়ার ১২ বছরের নবারুণ মাহাতো।
সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র পশ্চিম খেজুরবেড়িয়া হাই স্কুলে পড়াশোনা করে ছোট্ট নবারুণ। ১৫-২০টি প্রজাতির পশু, পাখির আওয়াজ করে রীতিমতো ভাইরাল এই কিশোর। বাড়িতেই বিভিন্ন আওয়াজ করতে করতে এভাবেই প্রতিভার বিকাশ হয়েছে কিশোরের। প্রথম অবস্থায় পরিবার ও প্রতিবেশীরা এমন আওয়াজ করার জন্য তাকে বকাবকি করলেও এখন তাকে সবাই বাহবা জানায়।
আরও পড়ুন: ঝাঁঝরা করে দেবে শরীর…! ছেঁকে ধরবে রোগ…! এই ৫ অভ্যেস এক্ষুনি ছাড়ুন, জানুন বিশেষজ্ঞের মত
বাবা রামপ্রসাদ মাহাতো, পেশায় মৎস্যজীবী জঙ্গলে মাছ ধরার পাশাপাশি আবার জমিতে চাষের কাজ করতেন। মা নমিতা মাহাতো বাড়িতে সংসারের কাজ দেখাশোনা করেন। সেই সুবাদে বাবার নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল নবারুণ। এলাকার বাসিন্দারা তার কাছে প্রায়ই বিভিন্ন পশু, পাখির ডাক শোনার জন্য বাড়িতে এসে ভীড় জমায়। দরিদ্র পরিবারের ছেলে নবারুণ। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি গ্রামবাসীদের। অদম্য জেদ ও শেখার ইচ্ছা দিয়ে বাস্তব জীবনে যে টারজান হয়ে ওঠা যায় তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল সুন্দরবনের ছোট্ট নবারুণ।
জুলফিকার মোল্যা