ঠিক কী হয়েছিল? আসলে মদ্যপ অবস্থায় বিয়ে করতে আসায় বর এবং তার বাবাকে আটকে রেখে দিল কনের পরিবার। কনের বাড়িতে প্রায় ১৮ ঘণ্টা বন্দি থাকল মাতাল বরও। এই অবস্থায় কনে বিয়ে করতে বেঁকে বসেন।
advertisement
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতাপগড়ের কান্ধাই থানা এলাকার বাকসিডিহ গ্রাম নিবাসী রামদাসের পুত্র সঞ্জয় নিজের কন্যার বিবাহ পাকা করেছিলেন করণপুর খুজি গ্রামের বাসিন্দা জিতলালের পুত্র অনীশের সঙ্গে। সোমবার রাতে বেশ আনন্দিত মনে বরযাত্রী নিয়ে রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে নাচতে নাচতে কনের গ্রামে পৌঁছেছিল বর। কনের বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছেও নাচ চলতে থাকে বরযাত্রীদের। তাঁদের সাদরে বরণ করে নেয় কনের পরিবার। এরই মাঝে হবু বরের চোখের দিকে নজর যায় কনের। আর সঙ্গে সঙ্গেই মেজাজ বিগড়ে যায় তাঁর। কারণ ততক্ষণে কনে বুঝে গিয়েছেন, তাঁর হবু স্বামী মদ্যপান করে বিয়ে করতে এসেছে।
এদিকে আত্মীয়দের গালিগালাজ করতে শুরু করে মদ্যপ বর। এরপরেই কনের পরিবারের লোকেরা বরকে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে তারা দুপক্ষকেই বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বিষয়টা নিয়ন্ত্রণে তো আসেইনি, বরং পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। মাতাল বরের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে অস্বীকার করে কনের পরিবার।
আরও পড়ুন– ভুলেও ঘাঁটাবেন না, প্রতিশোধস্পৃহা ১৭ বছর ধরে পুষে রাখে কাক, কখন কী করবে কোনও ভরসা নেই
কিন্তু বিয়েতে বেঁকে বসলেও বরযাত্রীদের খাইয়েদাইয়ে বাড়ি পাঠিয়য়ে দেন কনের পরিবারের লোকেরা। তবে আটকে রাখা হয় বর এবং তার বাবাকে। পরিস্থিতি শোচনীয় দেখে দুপক্ষের লোকজনই জড়ো হয়। পঞ্জায়েত বসে। দীর্ঘ সময় ধরে চলে বাকবিতণ্ডা। কনের পরিবারের লোকেরা দাবি করতে থাকেন যে, বিয়ের ব্যবস্থা করতে তাঁদের যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, সেটা যেন ফিরিয়ে দেন বরের পরিবারের লোকেরা। সেই শর্ত মানলেই বর এবং তার বাবাকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানায় কনের পরিবার।
এরপর রাত ৩টে নাগাদ দুপক্ষ একটা মীমাংসায় পৌঁছয়। খরচ বাবদ কনের পরিবারের হাতে ৯৫ হাজার টাকা তুলে দেয় বর। এরপরেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। আপাতত এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
পাত্তি সিও আনন্দ কুমার বলেন যে, বর মদ্যপান করে বিয়ে করতে এসেছিল। সেই কারণে বেঁকে বসেছিল কনে। পরিবারটি বর এবং তার বাবাকে আটকে রাখে। পঞ্চায়েতে গিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি ঘটে। বিয়ের খরচ এবং উপহারের টাকা ফেরত দিয়ে তবেই নিস্তার পেয়েছে বর এবং তার বাবা।
হবু বর অনীশের বক্তব্য, “আমি তো অল্পই মদ খেয়েছিলাম। কিন্তু বিষয়টি গুরুতর হয়ে উঠেছিল। তাছাড়া আর কিছুই নয়। বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমার বিয়ে ছিল। কিন্তু সেটা ভেঙে গিয়েছে। কারণ আমি মদ্যপান করেছিলাম। আমাদের আটকে রাখা হয়নি। আমরা স্বাভাবিক ভাবেই আলাপ-আলোচনায় বসেছিলাম।”
বরের বাবা জিতলাল বলেন যে, “সোমবার বরযাত্রী নিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের গাড়িটা পিছনে ছিল। আর বরের গাড়িটা ছিল সামনে। আমরা জানতামও না যে, আমাদের ছেলে মদ্যপান করেছেন। এর জন্যই পুরো বিষয়টাই ঘেঁটে যায়। আমরা কনেপক্ষকে ৯৫ হাজার টাকা দিচ্ছি। বিষয়টাকে এভাবেই মেটানো হয়েছে।”