পটনা: বাংলাদেশকে গঙ্গার জল দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানাল বিহার। কেন্দ্রকে চুক্তি পর্যালোচনার অনুরোধ জানিয়েছে নীতীশ কুমার সরকার। বিহারের দাবি, বাংলাদেশকে জল দিতে গিয়ে বিহারের গঙ্গায় পলি জমছে। শুকিয়ে যাচ্ছে গঙ্গা।
উল্লেখ্য, গঙ্গা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে যে জল দেওয়া হয় তার বেশিরভাগটাই যায় বিহার থেকে। গত কয়েক বছর ধরে বিহারের গঙ্গায় জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জল বন্টন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন করে ভাবা উচিত বলে মনে করে বিহার সরকার।
advertisement
বিহারের জলসম্পদ মন্ত্রী বিজয় চৌধুরী বলেন, “শুরু থেকেই আমরা ১৯৯৬ সালের চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। কারণ চুক্তি চূড়ান্ত করার সময় আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি।“ বিহারের আপত্তির বড় কারণ হল ফরাক্কা ব্যারেজ।
জলসম্পদ মন্ত্রীর দাবি ফরাক্কা ব্যারেজের কারণে গঙ্গায় পলি জমছে। জল শুকিয়ে যাচ্ছে। বারবার বন্যার কবলে পড়ছে বিহার। যেহেতু চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের সময় এসে গিয়েছে তাই পলি সমস্যা এবং বিহারের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা হোক।
গঙ্গার প্রবাহ, জীববৈচিত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব এবং পরিবেশগত ভারসাম্যের অবনতির কারণগুলো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা জরুরি বলে দাবি করেছে বিহার সরকার। বিহারের সমস্যা মিটিয়ে চুক্তি নবীকরণ করা উচিত, এমনটাই মনে করেন রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও এই নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বিষয়টা প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রীকে জানিয়েছেন।“
বিহারের আরও দাবি, গঙ্গার তীরবর্তী রাজ্যগুলি বিনা বাধায় গঙ্গার জল ব্যবহার করে। বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে শুরু করে ব্যারাজ এমনকী, সেচের জন্যও জল নেয়। কিন্তু বিহারকে প্রত্যেক কাজের জন্য কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হয়। জলসম্পদ মন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশকে জল সরবরাহের যে কোটা রয়েছে বিহারের মতো তা উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্যও লাগু হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন– কোন গন্ধ পেলে সাপ পালায় জানেন? উত্তর শুনলে চমকে যাবেন আপনিও
ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী, গঙ্গার জলের ৭০ হাজার কিউসেকের মধ্যে ৩৫ হাজার কিউসেক ভারত নেয় আর ৩৫ হাজার কিউসেক বাংলাদেশ। প্রবাহ যদি ৭০ থেকে বেড়ে ৭৫ হাজার কিউসেক হয়, তাহলে অতিরিক্ত জল ভারতের কাছে থাকবে। আর ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি হলে ৪০ হাজার কিউসেক ভারত নেবে আর বাকি অতিরিক্ত বাংলাদেশকে দেওয়া হবে।
১৯৯৬ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া এবং বাংলাদেশের সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে গঙ্গার জল নিয়ে চুক্তি হয়েছিল। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে ভারত-বাংলাদেশ জল চুক্তি পুনর্নবীকরণ হওয়ার কথা রয়েছে। খুব শীঘ্রই দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত আলোচনা শুরু হবে।